বিশ্ব ইজতেমামুখী চাপে সপ্তাহের শেষ দিন রাজধানীর মহাখালী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়কে তীব্র যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে চলতি পথের যাত্রীদের।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় তীব্র যানজট ছিল ভোর থেকেই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাখালী, রামপুরা এবং মিরপুরের কালশী পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে সেই জট।
সকাল থেকে তীব্র যানজটে অফিসযাত্রী এবং শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় বিপাকে। গন্তব্যে পৌঁছাতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
মহাখালীতে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. সালাউদ্দিন বলেন, “ভোর রাত থেকেই বিমানবন্দর সড়কের দিকে যানবাহনের গতি কমে যায়। সকালে কোনো গাড়িই উত্তরার দিকে যাচ্ছিল না। গাড়ির জট তেজগাঁও পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।”
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দলে দলে মানুষ যাচ্ছে গাজীপুরের টঙ্গীর দিকে, তারই প্রভাব সড়কে পড়েছে।
শুক্রবার ভোরে শুরু হবে এবারে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিতা। তাতে যোগ দিতে বুধবার থেকেই টঙ্গীমুখী ভিড় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে ইজতেমা মাঠ।
রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। সেদিন আরও অনেকেই মোনাজাতে যোগ দিতে টঙ্গীর পথ ধরবেন।
উত্তরা ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, “ইজতেমার কারণেই এই যানজট। অনেক গাড়ি আসছে আর গাড়ি থেকে নেমে মানুষ পায়ে হেঁটে তুরাগ মাঠে যাচ্ছে। প্রচুর মানুষ রাস্তায় নেমে গিয়ে পারাপার হচ্ছে। ফলে গাড়ির গতিও কমে যায়। ইজতেমা শুক্রবার শুরু হবে, কিন্তু গতকাল রাতেই পুরো মাঠ মানুষে ভরে গেছে।”
এই চাপ সামলাতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কোনো ত্রুটি ছিল না দাবি করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এত মানুষ প্রধান সড়ক দিয়ে পারাপার করছে। এতে উভয় পাশেই গাড়ির জট লেগে যায়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।”
ইজতেমায় যাওয়ার জন্য বুধবার রাত ১টায় লালবাগ থেকে ভাড়া গাড়িতে টঙ্গীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন মহসিন এবং তার একজন প্রতিবেশী। তুরাগ পাড়ে পৌঁছাতে তাদের বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা বেজে গেছে।
মহসিন বলেন, “ভোর রাতে উত্তরা বিমানবন্দর সড়কে কোনো গাড়িই উত্তর দিকে যেতে পারছিল না। সকালের দিকে কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে আমরা টঙ্গী পৌঁছাতে পেরেছি।”
সকালে খিলক্ষেত এলাকায় আবদুল্লাহপুরগামী যানবাহনকে যানজটে আটকে থাকতে দেখা যায়। উল্টো দিকে উত্তরা থেকে বনানীমুখী লেইনেও গাড়ি চলছিল ধীরগতিতে।
গাড়ির অপেক্ষায় বহু মানুষকে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আবার অনেকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হন।
বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের। ফ্লাইট ধরতে অনেকেই লাগেজ নিয়ে পায়ে হেঁটে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
সোহেল খান নামে একজন জানান, ফার্মগেইট থেকে তিনি প্রতিদিন উত্তরা যান অফিস করতে। কিন্তু সকালে মহাখালী ফ্লাইওভার পার হতেই তার ২ ঘণ্টা লেগেছে। পরে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে রওনা হয়েছেন।