চট্টগ্রামে বিএনপি ‘ব্যর্থ সমাবেশ’ করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির ছক এঁকেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বিএনপি তিন মাস হাঁকডাক করে মহাসমাবেশ নাম দিয়ে একটি ‘ফ্লপ’ সমাবেশ করেছে। সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের চট্টগ্রামে এনে হোটেল ভাড়া করে রেখেছে। পরদিন তাদের নিয়ে সমাবেশ করেছে।
“চট্টগ্রামে জব্বারের বলি খেলায় এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ হয়। সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা এই সমাবেশে ছিল না।”
চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে শনিবার মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি চট্টগ্রামে যেই সমাবেশ করেছে, সেই সমাবেশের প্রস্তুতি তারা দীর্ঘ তিনমাস ধরে নিয়েছে।
“প্রস্তুতি নিয়ে তারা বলেছিল, ১৫ লক্ষ মানুষের সমাগম হবে। এখান থেকে কক্সবাজারের দুরত্ব ১৮০ কিলোমিটার, টেকনাফের দুরত্ব ২৫০ কিলোমিটার, সেখান থেকেও মানুষ এনেছে।
“তারা পলোগ্রাউন্ড মাঠের চল্লিশ শতাংশ পেছনে রেখে মঞ্চ করেছে। আর সামনের যেই অংশ তার অর্ধেকও পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ পলোগ্রাউন্ড মাঠের একতৃতীয়াংশও ঠিকমত পূর্ণ হয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে, জব্বারের বলিখেলায় অনেক বেশি মানুষ হয়। বিএনপি হাঁকডাক করেও মহাসমাবেশ নাম দিয়ে একটি ফ্লপ সমাবেশ করেছে।”
আগামী নভেম্বর মাসে চট্টগ্রামে সমাবেশ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করে। আমরা জনগণকে নিয়েই আগামী মাসে গণসমাবেশ ও মিছিল করব চট্টগ্রামের প্রত্যেকটি উপজেলা ও থানায়।
“তার পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শহরে আমরা জেলা সমাবেশ করব। তখন আপনারা দেখবেন ইনশাল্লাহ আমাদের জেলা সমাবেশ কেমন হয়।”
চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্যের অভিযোগ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “বিএনপি চট্টগ্রামে একটি সমাবেশ করেছে, সেই সমাবেশ থেকে তারা নানাধরণের আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। সেই সমাবেশে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের সমাবেশ ঘটিয়েছে। চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির একটি ছক এঁকেছে।”
বিএনপির আন্দোলনের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রী বলেন, “বিএনপি গত ১৪ বছর ধরেই এই আন্দোলনের মধ্যে আছে। আমরা সরকার গঠনের দুয়েকমাস পর থেকেই তারা সরকারকে বিদায় দেওয়ার আন্দোলনের মধ্যে আছে। আন্দোলন করতে করতে দেখা গেল তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
“তাদের আন্দোলনের মধ্যেই জনগণ পরপর তিন বার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদেরকে দিয়েছে। তারা এই আন্দোলন করার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি আগামী নির্বাচনে ভোট আমাদের আরো বাড়বে ইনশাল্লাহ।”
বিএনপি ‘নৈরাজ্যের পথে’ হাঁটছে মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের ‘সতর্ক থাকার’ আহ্বান জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি বলেন, “তারা সংঘাত চায়। তবে তারা সংঘাতের পথে হাঁটলে জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।”
সভায় অন্যদের মধ্যে জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিতা, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও দিদারুল আলম, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।