আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের কারণে ঢাকায় ২৪ ডিসেম্বরের গণমিছিলের কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করেছে বিএনপি। তবে অন্যান্য মহানগর ও জেলায় ২৪ ডিসেম্বরে ঘোষিত গণমিছিল হবে।
শনিবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনার কথা জানান।
গত ১০ ডিসেম্বরের বহুল আলোচিত সমাবেশে বিএনপি সরকার পতন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ১০ দফা ঘোষণার পর ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়েছিল।
তবে ওই দিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে বলে সেদিন এই কর্মসূচি না রাখতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সংবাদ সম্মেলনে নজরুল বলেন, “যেহেতু বিএনপি সংঘাত চায় না, যেহেতু বিএনপি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট নিরসন করতে চায়, সমস্যার সমাধান চায় এবং যেহেতু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব ২৪ তারিখে তাদের কাউন্সিলের কারণে আমাদের ঘোষিত কর্মসূচির পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছেন, আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের প্রতি, সেজন্য আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক আচরণ করতে চাই।
“আমাদের পূর্বঘোষিত ২৪ ডিসেম্বরের যে কর্মসূচি আমাদের ১০ দফা আদায়ের লক্ষ্যে- সেটা আমরা পূনর্বিনাস করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেহেতু ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য ২৪ তারিখে ঢাকায় আমরা গণমিছিল করব না। ঢাকা বাদে সারাদেশে গণমিছিলের যে কর্মসূচি আছে.. জেলা-মহানগরে সেটা অব্যাহত থাকবে।”
কর্মসূচি পালনের নতুন দিন হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনকে উপলক্ষ করেছে বিএনপি; ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ রয়েছে তাদের।
নজরুল বলেন, “ঢাকায় ২৪ তারিখের পরিবর্তে আমরা একটা উপযুক্ত দিনের চিন্তা করছিলাম। আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, ৩০ তারিখ সর্বোত্তম একটা চয়েস, সবচেয়ে ভালো একটা অল্টারনেটিভ হতে পারে। এই কারণে যে অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে যা আমাদের আন্দোলন এবং নির্বাচিত যথাযথভাবে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে জনগণকে ৩০ ডিসেম্বর স্মরণ করিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
“কারণ ২০১৮ সালের এই দিনে(৩০ ডিসেম্বর) দিনের ভোট রাতে করে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরে আমাদের ১০ দফার দাবির আলোকে এবং সেই ভোট জালিয়াতি এবং ভোট চুরির মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত এই দুর্নীতিবাজ অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী সরকারের পদত্যাগ, ওই সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিন ক্রমবর্ধমান ঊধর্বগতি প্রতিরোধ, সরকার ও তাদের ঘনিষ্ঠজনদের সীমাহীন দুর্নীতি-অনাচার-লুটপাটের অবসানের লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পরিবর্তে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই সেই লড়াইকে আমরা এগিয়ে নেবো ৩০ তারিখের গণমিছিলের মাধ্যমে।”
গণমিছিল ঢাকায় কোথায় হবে, তার স্থান পরে জানানো হবে বলে জানান নজরুল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, তাইফুল ইসলাম টিপু উপস্থিত ছিলেন।