তুমব্রু সীমান্তের পর এবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দোছড়ি সীমান্ত এলাকার ওপারে মিয়ানমার অংশে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে; এতে এপারে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার রাত থেকে দোছড়ি ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত পিলার ৪৮-৪৯ নম্বরের কাছাকাছি মুহুর্মুহু গুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান মো. এমরান জানান। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
শনিবার বিকালে দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, “শুক্রবার রাতে মুহুর্মুহু গুলির পর শনিবার দুপুর ১টার দিকে একটা গুলি দোছরি বাজারের পশ্চিম দিকে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাকে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় বসবাস করা লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।”
“এই অবস্থায় মাইকিং করে একেবারে সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করা লোকজনদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের কাছাকাছি আত্মীয়-স্বজন নেই তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় অথবা স্কুলে এসে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এসব তদারকি করার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে “
এ ঘটনার পর দোছড়ি সীমান্ত এলাকায় বিজিবি টহল বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে এই জনপ্রতিনিধি বলেন, এতদিন ঘুমধুম ইউনিয়নে তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও দোছড়ি এলাকায় এই প্রথমবারে মত গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি বিষয়ে জানতে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি-১১ ব্যটালিয়নরে অধিনায়ক রেজাউল করিমকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
মিয়ানমার বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাখাইনদের সংগঠন আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করছে। সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হচ্ছে। যার কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এরই মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজনের প্রাণ গিয়েছে, অঙ্গহানি ঘটেছে দুজনের। গোলা বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন সীমান্তে শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া এক রোহিঙ্গা যুবক।
এ সব ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে বেশ কয়েকবার ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। এর মধ্যেই এবার দোছড়ি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেল।
স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গত ২৮ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টার শেল, গোলাগুলির শব্দ আর সীমান্ত ঘেঁষে যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা দেখা গেলে সীমান্তবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটলে সরকারের কড়া প্রতিবাদের মুখে তা কিছু দিন বন্ধ ছিল।