মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেলাওয়ারের বাড়ি থেকে গোপনীয় নথির অতিরিক্ত আরও পাঁচটি পৃষ্ঠা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
বাইডেনের আইনজীবী রিচার্ড সউবার জানান, বৃহস্পতিবার তিনিই ওই অতিরিক্ত নথিগুলো খুঁজে পান, যা তাৎক্ষণিকভাবে বিচার মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এসব নথি বাইডেন যখন বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখনকার বলে বাইডেনের সহযোগীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
সেসব গোপন নথি বাইডেন কিভাবে সামলেছিলেন, কেন সেগুলো আর্কাইভে জমা দেননি তা তদন্তে এরই মধ্যে এক স্পেশাল কাউন্সেলকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন ব্যস্ত ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বাড়ি থেকে পাওয়া গোপন নথি নিয়ে। ট্রাম্প সেগুলো আইন মেনে সংরক্ষণ করেননি বলে অভিযোগ আছে, এ নিয়েও তদন্ত চলছে। পূর্বসূরীর ওই ঘটনা নিয়ে বেশ উচ্চকিত ছিলেন বাইডেন।
এখন তার বাড়ি এবং একসময়ের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে গোপন নথি উদ্ধারের ঘটনা ডেমোক্র্যাটদের রাজনৈতিকভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়েছে।
কিছুদিন আগেই বাইডেনের ডেলাওয়ারের উইলমিংটনের ওই পারিবারিক বাড়ির গ্যারেজ থেকে ‘গোপনীয়’ লেখা একটি নথি উদ্ধার হয়েছিল, ওই গ্যারেজেই বাইডেন তার শেভ্রোলেট করভেট স্পোর্টস গাড়িটি রাখতেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যে অতিরিক্ত ৫ পৃষ্ঠা পাওয়া গেছে সেগুলো মিলেছে তার বাড়ির ভেতরেই, বলেছে হোয়াইট হাউস।
টুইটারে দেওয়া বিবৃতিতে সউবার জানান, প্রেসিডেন্টের আইনজীবীদের নিরাপত্তা অনুমোদন না থাকায় তারা বুধবার গোপন নথির একটি পৃষ্ঠা পাওয়ার পর আশপাশের জায়গায় অনুসন্ধান চালাতে পারেননি।
কিন্তু সউবারের নিরাপত্তা অনুমোদন থাকায় তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিচার মন্ত্রণালয়কে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নথিগুলো প্রস্তুত করতে ডেলাওয়ারের ওই বাড়িতে যান। তখন তিনি গোপন নথির অতিরিক্ত আরও পৃষ্ঠা পান।
“যখন আমি এক পৃষ্ঠার নথিটি হস্তান্তরে বিচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সেখানে যাই, ওই নথির সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রের মধ্য থেকে গোপনীয় লেখা আরও ৫ পৃষ্ঠা বের হয়, সব মিলিয়ে ৬ পৃষ্ঠার গোপন নথি জমা পড়ে,” বলেছেন তিনি।
এই ছয় পৃষ্ঠার বাইরে, ডিসেম্বরে বাইডেনের বাড়ির গ্যারেজ এবং নভেম্বরে পেন বাইডেন সেন্টারে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পরবর্তী সময়ে থাকা বাইডেনের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকেও অনেক গোপন নথি উদ্ধার হয়েছে।
এসব গোপন নথি কীভাবে বাইডেনের কাছে রয়ে গেল, তা তদন্তের দায়িত্বে থাকা কাউন্সেলকে হোয়াইট হাউস সহযোগিতা করবে, বলেছেন সউবার।
শুক্রবার মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে পেন বাইডেন সেন্টার থেকে ১০টির মতো গোপন নথি উদ্ধার করা হয়েছিল বলে জানানো হয়। ওই গোপন নথিগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি ছিল ‘টপ সিক্রেট’।
যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথিগুলো সাধারণত তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। কনফিডেন্সিয়াল, সিক্রেট এবং টপ সিক্রেট। কোনো ‘টপ সিক্রেট’ নথি ফাঁস হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ‘মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে’।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ পর্যন্ত বাইডেন তার মেয়াদকালের এক চতুর্থাংশেরও বেশি সময়, প্রায় ২০০ দিন ডেলাওয়ারে কাটিয়েছেন, জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা।
রিপাবলিকানরা এখন প্রেসিডেন্টের ডেলাওয়ারের বাড়ির দর্শণার্থী তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে; এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হবে কিনা, সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।