গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার এক মামলায় ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করে দিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম মেহেদী হাসান।
রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, রাসেলকে কারাগার থেকে এদিন আদালতে আনা হয়। ইভ্যালির আরেক কর্মকর্তা মইনুল হকও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে জামিনে থাকা শামীমা আদালতে ছিলেন না, তার পক্ষে সময়ের আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী।
শুনানিতে আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। তাদের পক্ষে অব্যাহতি চেয়ে যুক্তি দেখান আইনজীবী আহসান হাবিব। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
শুনানি শেষে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক। আদালতে হাজির না হওয়ায় শামীমাকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন তিনি।
অন্যদিকে আসামি মইনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মত উপাদান ‘মামলায় না থাকায়’ তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
৩ লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে গুলশান থানায় ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন আরিফ বাকের নামে এক গ্রাহক। মামলায় তিনি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম গত ২৯ অগাস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
কয়েক বছর আগে ই-কমার্স ব্যবসার রমরমার শুরুতে গাড়ি, মোটরসাইকেল, গৃহস্থালির আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের নজরে এসেছিল ইভ্যালি।
তাদের চমকদার অফারের ‘প্রলোভনে’ অনেকেই বিপুল অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন, পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায় বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর বের হয়।
কিন্তু মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তাদের অনেকে পণ্য বুঝে পাননি; ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেওয়া টাকাও ফেরত দেয়নি।
এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কিছু ই কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভে নামে গ্রাহকরা। তখন বেশ কিছু মামলাও হয়।
এরকমই এক গ্রাহকের করা মামলায় গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এরপর থেকে এই দম্পতির বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।
আট মাস কারাবাসের পর সবগুলো মামলায় জামিন পেয়ে গত ৬ এপ্রিল কারামুক্ত হন ইভ্যালির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা। তবে তার স্বামী ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা রাসেল এখনও কারাগারেই আছেন।