ভারত শাসিত কাশ্মীরের পুলিৎজারজয়ী চিত্রসাংবাদিক সানা ইরশাদ মাট্টু ফের বিদেশে যেতে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। পুরস্কার নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সময় দিল্লির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ট্যুইটারে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন সানা। মঙ্গলবার ট্যুইটে তিনি লেখেন, “পুলিৎজার পুরস্কার নিতে নিউ ইয়র্কে যাচ্ছিলাম। কিন্তু দিল্লি বিমানবন্দরের অভিবাসন বিভাগে আমাকে আটকানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ভিসা এবং টিকিট থাকার পরও আমাকে দেশের বাইরে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।”
সানা আরও লেখেন, “এ নিয়ে চারমাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার বিনা কারণে আমার বিদেশযাত্রা আটকানো হল।” বিবিসি-কে সানা বলেন, কেন তাকে যেতে দেওয়া হল না সেকথা তিনি কর্মকর্তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছেন। কিন্তু এর কোনও কারণ তারা জানায়নি।
ভারত সরকার সানাকে বিদেশে যেতে না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি। তবে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের বরাত দিয়ে পিটিআই বার্তা সংস্থা বলেছে, সানার নাম নো-ফ্লাই তালিকায় থাকার কারণে তাকে যেতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু কেন তার নাম নো-ফ্লাই তালিকায় আছে সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
‘পুরস্কারের মঞ্চে থাকার মতো সুযোগ জীবনে একবারই আসে’ বলে আক্ষেপ করে সানা ট্যুইটে লিখেছেন, এই সুযোগ না পাওয়ায় তার মন ভেঙে গেছে। ভারতে কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়কার দুর্দশা তুলে ধরে ২০২২ সালে পুলিৎজার পুরস্কার জয় করেছেন সানা। এ পুরস্কার নিতে সোমবারই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিনতু তাতে বাধা পেলেন তিনি।
এ বছর আরও বেশ কয়েকজন মানবাধিকারকর্মী এবং সাংবাদিক ভারত ছেড়ে যাওয়া কিংবা ভারতে ঢুকতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে। গত মার্চে ওয়াশিংটন পোস্টে কাজ করা সাংবাদিক রানা আইয়ুব একটি আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য যাওয়ার সময় মুম্বাই বিমানবন্দরে বাধার মুখে পড়েন।
এরপর গত এপ্রিলে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টির সাবেক ভারতীয় প্রধান আকর প্যাটেলকেও যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার সময় ব্যাঙ্গালুরু বিমানবন্দরে দুইবার বাধা দেওয়া হয়।
কাশ্মীরি চিত্রসাংবাদিক সানাকেও এর আগে গত জুলাই মাসে দিল্লি বিমানবন্দরেই আটকানো হয়েছিল। সেবার একটি বইয়ের উদ্বোধন এবং চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিতে প্যারিসে যাচ্ছিলেন তিনি। অভিবাসন কর্মকর্তারা সেবারও তাকে আটকানোর কোনও কারণ জানাননি।
শ্রীনগরের বাসিন্দা ২৮ বছরের সানা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের হয়ে চিত্রসাংবাদিকের কাজ করেন। ২০২২ সালে রয়টার্সের আরও দুই চিত্রসাংবাদিকের সঙ্গে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।