হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের এক ছাত্রের মৃত্যুর পর তার চিকিৎসায় ‘অবহেলার’ অভিযোগ এনে তার সহপাঠীরা বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়।
এর জেরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে রাত ১১টার দিকে কর্মবিরতি শুরু করেন। রাত ১২টায় তারা সবাই একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। তার আগে সাংবাদিকদের সামনে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরাম হোসেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের দাবি, হাসপাতালে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।”
এ পরিস্থিতিতে গভীর রাতে বৈঠকে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এমজিএম শাহরিয়ারের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তদন্তে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই সঙ্গে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাত ৮টার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের চারতলার ছাদ থেকে পড়ে আহত হন মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শাহরিয়ারের বন্ধুরা অভিযোগ করেন, পৌনে এক ঘণ্টা হাসপাতালে থাকলেও তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
ওই অভিযোগ তুলে তারা হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করেন এবং দুই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে হাসপাতালের আনসার সদস্য ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন।
পরে চিকিৎসায় অবহেলা ও শিক্ষার্থীদের ওপর ‘হামলায়’ জড়িতদের শাস্তি এবং আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিতে হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। রাত ২টা পর্যন্ত সেখানে তাদের বিক্ষোভ চলে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে হাসপাতাল ত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।