গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিএনপিকেও চাইছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান; দলটিকে ভোটে আনার পরিবেশও ইসি সৃষ্টি করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন অনেকর মুখে উচ্চারিত ‘খেলা হবে’ শব্দবন্ধটি রেশ ধরে ভোটের মাঠে বিএনপির থাকার উপরও জোর দেন তিনি।
রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আনিছুর। ইসিতে যোগ দেওয়ার সাড়ে আট মাসে এই প্রথম সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় এলেন সাবেক এই সচিব।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিতের উপরই ইসি সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
আনিছুর বলেন, “দলগুলোকে ভোটে নিয়ে আসাটা ইসির দায়িত্ব নয়। ভোট করবে তারা, ভোটের আসবে তাদের তাগিদে। পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই কমিশনের দায়িত্ব। সবাইকে ভোটে আসার জন্য শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব।
“আমাদের একটাই চ্যালেঞ্জ-সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া। কীভাবে করা যায়, আমাদের কর্মপরিকল্পনায় বলেছি। আমরা ওদিকে নজর দেব। সবাই যদি এটা না পায়, ভোটের পরিবেশ থাকবে না। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির জন্যই এটা করতে হবে।”
বিএনপি এখনও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থাসূচক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তাদের দাবি, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার না হলে তারা ভোটে যাবে না। আর এই দাবি পূরণের কোনো এখতিয়ার আবার ইসির নেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আবার বলে আসছে, বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরবে না।
বিএনপির ভোটে আসার মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি না হলেও দলটিকে পাওয়ার আশা রাখছেন এই নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, “বিএনপি নির্বাচনে আসবে। এখনও সেই অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। নির্বাচনে এখনও ১৪ মাসের কাছিকাছি বাকি; অনেক কিছু পরিবর্তন হবে।”
নিজেদের নিরপেক্ষ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আনিছুর বলেন, “আমি বলবো- সব দলের রেফারিগিরি করব আমরা। সব পক্ষই ভোটে থাকবে। আমরা রেফারি হিসেবে থাকব, সব পক্ষকে নিয়ে ভোটের মাঠে থাকব।”
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “মাঠে না থাকলে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তো বলতে পারবেন না। মাঠে থাকলে বলতে পারবেন, পরিবেশ ছিল কি ছিল না?
“ইংল্যান্ড-পাকিস্তান (তখন টি টোয়েন্টি ফাইনাল চলছিল) খেলা হচ্ছে; দুই দল মাঠে না থাকলে তো খেলা হবে না। রাজনীতিতেও খেলা হচ্ছে। কাজেই মাঠে থাকতে হবে। মাঠে না এসে তো বলতে পারবে না যে পরিবেশ নেই।”
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে পুরোটাই ইসির ‘নিয়ন্ত্রণে’ থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন আনিছুর।
সব দল অংশ নিবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী। এই কমিশনে পাচঁজনই আশাবাদী, সবাই নির্বাচনে আসবে৷
“নির্বাচনে অনেক রকম ক্যালকুলেশন হয়। সেই ক্যালকুলেশন এখনও বাকি আছে। দল জোটবদ্ধ হবে, বিভিন্ন রকমের হবে, ছোট দল-বড় দল। নির্বাচন যত কাছে আসবে, ততই বিষয়টি ঘনিয়ে আসবে, আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।”
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির শুরুতে ভোট করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।