অনেক বাধা আর বিপত্তি ঠেলে দীর্ঘ চেষ্টায় দখলমুক্ত হয়েছিল ঢাকার তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের সামনের সড়ক; যা আবারও আগের মতই দিন-রাতের যেকোনো সময় ট্রাক আর ভ্যান রাখার জায়গায় পরিণত হয়েছে।
অবৈধভাবে গাড়ি রাখার এ প্রবণতা বন্ধে ব্যস্ততম সাত রাস্তা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ড হয়ে রেলক্রসিং পর্যন্ত মেয়র আনিসুল হক সড়কে রিকশাসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেইন করা হচ্ছে; সেজন্য রাস্তায় বসানো হচ্ছে লোহার ব্যারিয়ার।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বলছে, সেখানে আলাদা লেইন করা হলে ওই সড়কের দুপাশে অবৈধ যানবাহন পার্কিং বন্ধ হবে। ফুটপাতও ব্যবহার করা যাবে নির্বিঘ্নে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ সড়কে ট্রাকগুলো আড়াআড়িভাবে ফুটপাতের পাশে রাখা থাকে। এতে ট্রাকের পেছনের অংশ ফুটপাতে চলে যায়, পথচারীরা হাঁটতে পারেন না।
“আমি দেখেছি সড়ক অনেক চওড়া, এ কারণে সড়কে ট্রাক রেখে দেয়। আমরা যদি রিকশা ও সাইকেলের জন্য আলাদা লেইন করে দিই তাহলে ফুটপাত ঠিক থাকবে। ট্রাকগুলো আড়াআড়ি রাখতে পারবে না। বাকি অংশে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।”
সাতরাস্তা থেকের রেলক্রসিং হয়ে কারওয়ান বাজার, ফার্মগেইট ও তেজগাঁও রেল স্টেশনের সংযোগকারী এ সড়ক দীর্ঘদিন ট্রাক স্ট্যান্ড হিসেবে বেদখল হয়েছিল। আনিসুল হক মেয়র হওয়ার পর সড়কটি দখলমুক্ত করেন। এজন্য ট্রাক শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘাতেও জড়াতে হয়েছিল সিটি করপোরেশনকর্মীদের।
সম্প্রতি ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে ট্যাক স্ট্যান্ডের সামনের সড়ক দিয়ে রেলক্রসিং পর্যন্ত যেতে দুইপাশে ফুটপাত ঘেঁষে তিন ফুট প্রশস্ত আলাদা লেইন করা হচ্ছে। এই অংশে বসানো হয়েছে লোহার ব্যারিয়ার। ফুটপাত ঘেঁষা অংশে সংস্কার করা হচ্ছে।
এরমধ্যেই অযান্ত্রিক লেইনের বাইরে যানবাহন চলাচলের জন্য আরও দুটি লেইন রয়েছে। ওই দুটি লেইন দখল করে ট্রাক রাখা হয়েছে। দিনের বেলা সেখানে যেমন ট্রাক, ভ্যান, পিকআপ থাকে রাতের বেলা এর সংখ্যা আরও বাড়ে। দীর্ঘসময় যানজট লেগেই থাকে।
রিকশা ও অন্যান্য গাড়ি চলাচল মুশকিল হয়ে পড়ে। ফুটপাতগুলোও অনেকটা ট্রাকের দখলে থাকায় হাঁটা হয়ে পড়ে মুশকিল।
এলোমেলো ট্রাক রাখার কারণে ঘিঞ্জি হয়ে পড়ায় সেদিক দিয়ে দিনের বেলাতেও ভয়ে লোকজন চলাচল করতে চান না। দিনের কিংবা রাতের চিত্র কমবেশি একই।
এ সড়কের আশেপাশে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি অফিস রয়েছে। অদূরে কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন, হলিক্রস স্কুল ও কলেজ, বিজ্ঞান কলেজসহ আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ফার্মগেইটে সংযোগ সড়ক হিসেবে এটি দিনের ও রাতের বড় অংশজুড়েই ব্যস্ত থাকে।
তবে অবৈধ ট্রাক, ভ্যান ও পিকআপ রাখার কারণে প্রায় শত ফুটের এ সড়ক সরু হয়ে রিকশা ও গাড়ি চলাচল মুশকিল হয়ে পড়ে। ফুটপাতও দখলে চলে যাওয়ায় হাঁটাও হয়ে পড়ে মুশকিল।
এমন প্রেক্ষাপটে এবার ভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে উত্তর সিটি করপোরেশন। রিকশারমত অযান্ত্রিক যানবাহনের জন্য লেইন করে দখল ঠেকানোর চেষ্টা নেওয়া হচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত তাতেও কাজ হবে কি না এমন প্রশ্নে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল বলেন, এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ, ট্রাক মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছে ডিএনসিসি। সড়ক সচল থাকবে।
“পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সব সময় মনিটর করবে। এছাড়া ট্রাক মালিকদের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। তাদের সহায়তাও দরকার, ডিএনসিসির একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব না।”
তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত সড়কটি ২০১৮ সালের জুনে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের নামে নামকরণ করে উত্তর সিটি করপোরেশন।