চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নজির ভেঙে তৃতীয় মেয়াদে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতাসী কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ধরে রেখেছেন এবং নিজের অনুগতদের নতুন পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য করেছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
রোববার বেইজিংয়ে গ্রেট হল অব পিপলসে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে শি-কে পার্টির জেনারেল সেক্রেটরি নির্বাচিত করা হয় বলে সরকারি প্রজ্ঞাপনের বরাতে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সিজিটিএন।
শি এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। অধিবেশনে সিপিসির ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৩ জন সদস্য ও ১৬৮ জন বিকল্প সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশনে সিপিসির কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও শি-র নাম ঘোষণা করা হয়। এর পাশাপাশি অধিবেশনে সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটব্যুরোর সাত সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদেরও নির্বাচিত করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন শি জিনপিং, লি ছ্যাং, চাও লে চি, ওয়াং হানিং, কাই চি, তিং শেইশাং ও লি শি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, শি-র অনুগতদেরেই পলিটব্যুরোর সদস্য করা হয়েছে আর এর মাধ্যমে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী দেশটির প্রতিষ্ঠাতা নেতা মাও জেদংয়ের পর সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান আরও মজবুত করে তুলেছেন।
চীনের অর্থনীতির শ্লথগতি, শি-য়ের জিরো কোভিড নীতি নিয়ে হতাশা, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাড়তে থাকা দূরত্ব যা রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি তার সমর্থনের কারণে আরও বেড়েছে- এসব নিয়ে এক টালমাটাল বছর পার করলেও স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের তালিকা ক্ষমতার ওপর শি-র নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কমিউনিস্ট পার্টির এক বিপ্লবীর ছেলে শি চীনকে আরও কর্তৃত্ববাদী শাসনের দিকে নিয়ে গেছেন। তার পরিষ্কার উত্তরাধিকারী হিসেবে যাকে বিবেচনা করা হতো স্ট্যান্ডিং কমিটির নতুন সদস্যদের মধ্যে তাকে রাখা হয়নি; এমনটি প্রত্যাশিতই ছিল বলে মন্তব্য রয়টার্সের।
লে কেছিয়াং ও ওয়াং ইয়াংকে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা তাদের তুলনামূলকভাবে মধ্যপন্থি বলে মনে করতেন যারা অপেক্ষাকৃত তরুণ হর্ওয়ায় শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটিগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রাখতে পারবেন মনে করা হতো। উভয়েই সঙ্গেই কমিউনিস্ট ইয়ুথ লিগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল; কিন্তু একসময়ের প্রভাবশালী এ গোষ্ঠীটি শি-য়ের আমলে ক্ষমতা হারিয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন।
চীনের প্রেসিডেন্টরা শুধু দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, এমন বাধ্যবাধকতা ২০১৮ সালে তুলে নেন শি। তখনই ধারণা করা হয়েছিল সম্ভবত তিনি দুই মেয়াদেরও বেশি দেশটির ক্ষমতায় থাকবেন।
মার্চে পার্লামেন্টের বার্ষিক অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার মেয়াদ নবায়ন করা হতে পারে। ওই অধিবেশনেই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।