ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিন আওয়ামী লীগ নেতা; যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের একদিন আগে রোববার দুপুরে তিন আওয়ামী লীগ নেতা একসঙ্গে গিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান জানান।
তিন প্রার্থী হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন এবং স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এই তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফলে নিজের ছেড়ে দেওয়া আসনের এই উপ-নির্বাচনে বিএনপির সাবেক নেতা ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঞা সহজেই উৎরে যাবেন বলে ভোটাররা আলোচনা করছেন।
আওয়ামী লীগ এই আসনটি উন্মুক্ত রেখেছিল; ফলে এখানে দলীয় কোনো প্রার্থী ছিলেন না।
বিএনপির পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছিল যে, দলটির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়টিকে বিতর্কিত করতেই সরকার চাপ দিয়ে উকিল আব্দুস সাত্তারকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান আরও বলেন, “দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে তিন প্রার্থী একসঙ্গে নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।”
মনোনয়পত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর এই আসনে উপ-নির্বাচনে আট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
উকিল আব্দুস সাত্তার ছাড়া এখন এই আসনের অপর চার প্রার্থী হচ্ছেন- জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী, জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার উপস্থিত ছিলেন।
দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তারসহ বিএনপির ৭ সংসদ সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে। ছেড়ে দেওয়া এসব আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তার আগে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদসহ বিএনপির সব ধরনের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান তিনি। পরে তাকে দলীয় সব পদ ও প্রাথমিক সদস্য থেকে বহিষ্কার করে দল।
উকিল আব্দুস সাত্তার কুমিল্লা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। তিনি ২৮ বছর জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও এই আসনটি আওয়ামী লীগ উন্মুক্ত রেখেছিল। সেবারও প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মঈন উদ্দিন। তিনি সেবার বিএনপির প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তারের কাছে হেরেছিলেন। তবে এই আসনে আওয়ামী লীগের ইতিহাসে তিনি সর্বোচ্চ পেয়েছিলেন।
ফলে এবার তিনি প্রার্থী হয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচন থেকে সেরে দাঁড়ালেন। ভোটের মাঠে থাকেননি আওয়ামী লীগের কেউ।
যদিও মনোয়নপত্র প্রত্যাহারের পর তিন আওয়ামী লীগ নেতার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।