ঢাকায় মেট্রোরেলের নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ভাড়ার এই হার প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অন্তত দ্বিগুণ বেশি।
ঢাকার মেট্রোরেল উদ্বোধনের আগের দিন মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভাড়া নিয়ে নিজেদের আপত্তি জানিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর ভাড়ার হারের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বিএনপি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল বুধবার উদ্বোধন হচ্ছে। নগরের এই গণপরিবহনের ভাড়ার হার ঠিক করা হয়েছে প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের জন্য ভাড়া ধরা হয়েছে ১০০ টাকা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ঢাকার মেট্রোরেলের এই ভাড়ার পরিমাণ শুধু দেশের বেসরকারি বাসভাড়ার দ্বিগুণই নয়, ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন নগরীর মেট্রোরেলের ভাড়ার চেয়ে ২ থেকে ৫ গুণ বেশি।
“সর্বনিম্ন ভাড়া দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও লাহোরের ভাড়ার প্রায় দ্বিগুণ এবং কলকাতার ৩ গুণ। ঢাকার ২০ কিলোমিটারের ভাড়া কলকাতার ৪ গুণ, নয়া দিল্লি, মুম্বাই ও চেন্নাইয়ের ৩ গুণ এবং লাহোরের ভাড়ার চেয়ে সাড়ে ৫ গুণ বেশি।”
নগরবাসীর যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘবে সরকারি উদ্যোগে মেট্রোরেল হলেও ভাড়ার হার জনগণের জন্য স্বস্তিদায়ক নয় বলে দাবি করছে বিএনপি।
নজরুল বলেন, “মেট্রোরেলের বিধিমালায় বলা হয়েছিল যে ঢাকা মহানগরের জনগণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য, সহজসাধ্য করার জন্য, সুলভ করার জন্য জনগণের টাকায় এই প্রকল্প করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরে দেখছি, ঢাকার বাসভাড়া যা, তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এই মেট্রোরেলের ভাড়া।”
তিনি বলেন, “যদি এটা আন্ডার গ্রাউন্ড হত, এর এয়ারকন্ডিশনিং খরচ আরও বেশি হত। কিন্তু আমাদের এটা (মেট্রোরেল) আন্ডার গ্রাউন্ড না। তাই এটার ভাড়া কম হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, লাহোর সব জায়গার চেয়ে আমাদের এখানে ভাড়ার পরিমাণ অনেক বেশি।”
ভাড়ার এই হারকে ‘গণবিরোধী’ মন্তব্য করে নজরুল বলেন, “তারা (সরকার) দুর্নীতি-অনাচার করে অধিক ব্যয় করেছে বলেই সম্ভবত এটা উসুল করার জন্য এটা করেছে। তাদের অপরাধের দায় জনগণ কেন নেবে?
“জনগণের দ্বারা নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ গণতান্ত্রিক সরকার হলে এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারত না।”
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সোমবার অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত জানাতে মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন নজরুল। সেখানেই মেট্রোরেলের ভাড়া নিয়ে কথা বলেন তিনি।