ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার মধ্যে নভেম্বরের প্রথম দুই দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজারে বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুধবার (২ নভেম্বর) সারাদেশে ১ হাজার ৯৪ জন ডেঙ্গু রোগীর হাসপাতালে ভর্তির তথ্য জানিয়েছে। এ বছর এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ।
এই সংখ্যা মিলিয়ে এই মাসের প্রথম দুদিনেই হাসপাতালের ভর্তি হলেন ২ হাজার ৭৭ জন রোগী। মঙ্গলবার এই সংখ্যা ছিল ৯৮৩। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এইডিস মশাবাহিত এই রোগে গত একদিনে আরও চারজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের নিয়ে দুদিনে মৃত্যু হলো ১১ জনের।
এ বছর এ পর্যন্ত সারাদেশে ৪০ হাজার ১০১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের।
গত ২৩ অক্টোবর ১ হাজার ৩৪ জন এবং ৩০ অক্টোবর ১ হাজার ২০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়।
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর এই সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এর আগে ২০১৯ সালে সারাদেশে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আর ২০২১ সালে হাসপাতালে গিয়েছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন।
২০১৯ সালে ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা এখন পর্যন্ত দেশে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু। ২০২১ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১০৫ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুধবারের সংবাদ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত একদিনে ভর্তি রোগীদের ৬০০ জন ঢাকায় এবং ৪৯৪ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৭৫০ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২ হাজার ৩৩২ জন। অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ হাজার ৪১৮ জন।
ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি ১৪৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায়।
এছাড়া বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৭২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।
দেশে এ পর্যন্ত যে ১৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৯২ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং নরসিংদীতে একজন ও মানিকগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়। চট্টগ্রাম বিভাগে ৪০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন এবং বরিশাল বিভাগে ৬ জন মারা গেছে।
বর্ষাকাল এলেই ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার উৎপাত বাড়ে। এ সময় এই মশার দংশনে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ে। তবে এ বছর এ রোগের প্রকোপ বেড়েছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে।
এ বছর অক্টোবর মাসে সবচেয়ে বেশি ২১ হাজার ৯৩২ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে ১২৬ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ জন, মার্চে ২০ জন, এপ্রিল মাসে ২৩ জন, মে মাসে ১৬৩ জন, জুন মাসে ৭৩৭ জন, জুলাই মাসে ১ হাজার ৫৭১ জন, অগাস্ট মাসে ৩ হাজার ৫২১ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৯ হাজার ৯১১ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সর্বাধিক ৮৬ জনের মৃত্যু হয় অক্টোবরে। এ ছাড়া জুনে ১ জন, জুলাইয়ে ৯ জন, অগাস্টে ১১ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে।