গাইবান্ধা উপ-নির্বাচন পেরিয়ে জেলা পরিষদের ভোটে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সোমবার অনুষ্ঠিত দৃশ্যত পরোক্ষ ভোটের এই নির্বাচনে অধিকাংশ জেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয় পেয়েছে আটটি জেলায়, জাতীয় পার্টির একজন এবং স্বতন্ত্র একজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে।
নির্দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচন সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলে।
৬০ হাজারেরও বেশি জনপ্রতিনিধি, যারা এ নির্বাচনে ভোটার, তারাই পছন্দের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য বাছাই করতে ভোট দেন।
স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির তালিকায় আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে জেলা পরিষদে ক্ষমতাসীন দলটির প্রার্থীদের জয় প্রত্যাশিতই ছিল। যে কারণে এ নির্বাচন নিয়ে তেমন উত্তাপ ছিল না।
তবে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে অনিয়মের কারণে ভোট স্থগিত করতে হওয়ায় জেলা পরিষদের এই ভোট নির্বিঘ্ন করা ছিল ইসির জন্য চ্যালেঞ্জের।
তবে বিকালে ভোট শেষে সাংবাদিকদের সামনে যখন সিইসি আউয়াল এসেছিলেন, তখন তাকে নির্ভারই দেখাচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খলভাবে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিসিটিভির মাধ্যমে ‘নতুন অভিজ্ঞতা’ হয়েছে নির্বাচন পরিচালনায়।
“আমাদের পর্যবেক্ষণটা আরও সমৃদ্ধ করেছি, নিঃসন্দেহে আমার সহকর্মীরাও সন্তুষ্ট। আগামীতে সকলকে আরও ভালো সুযোগ করে দেবে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের, কারণ আমরা স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচন চাই।”
এই নির্বাচনে দেশের ৫৭টি জেলায় ৪৬২টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য মিলিয়ে ৬৭১ জন জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে ভোটার ছিলেন সব মিলিয়ে ৬০ হাজার ৮৬৬ জন।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের কিছু অভিযোগ উঠলেও কমিশনের চোখে তা ধরে পড়েনি বলে জানান সিইসি। ঢাকার নির্বাচন ভবনের মনিটরিং সেলে সিসিটিভির পর্দায় চোখ রেখে বসেছিলেন তিনি। ভোট শেষে তার মুখে ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।
সিইসি বলেন, “আজ আপনারা দেখেছেন, ভোট কক্ষে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি যায়নি। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে যারা ভোটার, তারা ভোট দিয়েছেন। ভোটার সংখ্যা কম এখানে; দেখে সবাইকে ভদ্র, মার্জিত মনে হয়েছে।”
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান চেয়ারম্যান প্রার্থীদের একীভূত ফলাফল পরে গণমাধ্যমে সরবরাহ করেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে করে দেখা যায়, এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন ৪৯ জেলায়। এর মধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৫ জন এবং ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ২৪ জন।
১০ জেলায় স্বতন্ত্রদের কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা ৮ জেলায় বিদ্রোহীদের কাছে, ১ জেলায় জাতীয় পাটি এবং ১ জেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাজে হেরেছেন।
২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জিতেছিল ৪৫ জেলায়। তার মধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ২১ জন।