জানুয়ারি থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় এক শিফটে


FE Team | Published: October 30, 2022 20:27:51 | Updated: October 31, 2022 12:42:06


সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিফটে শ্রেণি কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী জানুয়ারি থেকে এটা করতে পারব। পুরোটা না করলেও অনেকটাই করতে পারব।”

ক্লাসে পড়ানোর সময় বাড়াতে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান আমিনুল।

তিনি বলেন, “ডাবল শিফট হওয়ায় সময়টা কম থাকে। সেজন্যই এক শিফটে যাচ্ছি। তাতে ৩ ঘণ্টার জায়গায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পড়ানো যাবে ক্লাসে।”

দেশে বর্তমানে ১৪ হাজার ৮৮৪টি সরকারি স্কুলে ৭টি বা তার বেশি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৯১৫টি বিদ্যালয়ে ডাবল শিফট চালু রয়েছে।

ডাবল শিফট চলছে, কিন্তু শিক্ষার্থী সংখ্যা কম এমন বিদ্যালয় রয়েছে ১৩ হাজার ৮০৯টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৪৮টি বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ রয়েছে ৭টি বা তার বেশি।

৩ থেকে ৬টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯ হাজার ৯৯৫টি। আর ৬৩৩টি বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ রয়েছে দুই বা তারও কম।

সচিব বলেন, “২ রুমে তো ক্লাস চালানো কোনোভাবে সম্ভব না। রাতারাতি ভবনও নির্মাণ করতে পারব না। সেজন্য ছাত্র, শিক্ষক সংখ্যা বিবেচনা করে দেশের সব স্কুলকে এক শিফটে আনার পরিকল্পনা করেছি। প্রায় ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।”

এতে কোনো শিক্ষককে চাকরি হরাতে হচ্ছে না বলে আশ্বস্ত করেছেন আমিনুল।

“কোনো স্কুলই বন্ধ হচ্ছে না, শিক্ষক চাকরি হারাচ্ছে না- সবই ঠিক থাকছে। কিন্তু আমরা কাজটাকে ভাগ করছি। দুই কক্ষ আছে, সেখানে প্রাক- প্রাথমিক, প্রাথমিক থাকবে- ক্লাস ওয়ান। আবার খুবই নিকটে অন্য কোন স্কুল আছে, সেখানে আমরা করব। যেখানে ভবনের সুযোগ আছে, ভবন করব।”

একেক জায়গায় একেক কৌশলে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন বলে ধাপে ধাপে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সচিব বলেন, “কোথাও ছাত্র কম, কোথাও স্কুল কম। এমনও গ্রাম আছে তিন কিলোর মধ্যে মাত্র একটি স্কুল রয়েছে। ২-৩টি কক্ষ আছে। সেখানে এটা বাড়ানো ছাড়া কোনো সুযোগ নেই। কোন চরে ছাত্র আছে হয়ত ৫০ জন, কিন্তু স্কুলটা আমাদের রাখতে হচ্ছে; কারণ সেখানে পড়বার আর কোনো ব্যবস্থা নেই।

“কোথাও শিক্ষার্থী কম, কিন্তু কক্ষ বেশি; সেক্ষেত্রে পাশ থেকে নিয়ে আসতে হবে। আবার কোথাও ভালো শিক্ষক, সেখানে সব শিক্ষার্থী যাচ্ছে। সেখানে শিক্ষক অদল-বদল করে দিলে এটা আর হবে না।”

এক শিফটে স্কুল চালালে শ্রেণি কার্যক্রমের সময়সূচি কী হবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান সচিব।

“পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে- গ্রাম, শহর, যাতায়াতের বিষয় আছে। সুবিধা-অসুবিধা দেখা হচ্ছে। তবে সারাদেশে একই সময়ে স্কুল চালু ও শেষ করতে পারলে আমার মনে হয় ভালো হয়। আমরা দেখছি।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছাড়ার আগে রোববার বিদায়ী মতবিনিময়ে এসেছিলেন আমিনুল ইসলাম খান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে রোববার শেষ কর্মদিবস ছিল তার। সোমবার থেকে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের দায়িত্বে যাচ্ছেন তিনি।

সাংবাদিকরা আমিনুলের কাছে জানতে চান, সরকারি স্কুলের মান খারাপ হওয়ায় বেসরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীর চাপ বেশি থাকছে, বিষয়টি তিনি কীভাবে দেখছেন?

জবাবে আমিনুল বলেন, “সরকারি স্কুলের মান বাড়ালে শিক্ষার্থীরা আসবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তাদের দক্ষতা বাড়াতে সরকার কাজ করছে।”

সরকারি স্কুলে ভালো শিক্ষক থাকলেও মানসিকতা ও অর্থনৈতিক কারণে অনেকে বেসরকারি স্কুলে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব ফরিদ আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

Share if you like