Loading...
The Financial Express

জঙ্গিদের সঙ্গে বম পার্টির যোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| Updated: October 17, 2022 10:17:24


ফেইসবুকে একটি পেইজ চালায় পাহাড়ের সশস্ত্র দল ‘কেএনএফ’ বা বম পার্টি, সেখানেই মিলেছে এই ছবি। কেএনএ দিয়ে তারা বোঝায় কুকি-চিন  ন্যাশনাল আর্মি। ফেইসবুকে একটি পেইজ চালায় পাহাড়ের সশস্ত্র দল ‘কেএনএফ’ বা বম পার্টি, সেখানেই মিলেছে এই ছবি। কেএনএ দিয়ে তারা বোঝায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি।

পাহাড়ের সশস্ত্র দল ‘কেএনএফ’ বা বম পার্টির সঙ্গে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায়’ কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেছেন, “এগুলো আমরা দেখছি। যদি কানেকশন পাই, তাহলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ধারণা করছি যে জঙ্গিরা সেখানে গিয়েছিল, তারা কেএনএফের পাশাপাশি ক্যাম্পে অবস্থান করছিল। আমরা এ ঘটনাগুলো দেখছি।

“কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সবার থেকে তথ্য নিয়ে প্রকৃত বিষয়টি সবাইকে জানানো হবে।“

রাজধানীর বঙ্গবাজারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন মন্ত্রী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হওয়া কয়েকজন তরুণের বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে সম্প্রতি ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায়’ নামে নতুন এক জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

এ বাহিনী বলছে, উগ্রবাদে আকৃষ্ট হয়ে গত দুই বছরে বাড়ি ছাড়া ৫৫ তরুণের খোঁজ তারা পেয়েছে, তাদের মধ্যে ৩৮ জনের একটি তালিকাও তারা প্রকাশ করেছে।

দুই দফায় ওই দলের ১২ জনকে গ্রেপ্তারের পর গত ১০ অক্টোবর র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি অংশ পৃষ্ঠপোষকতা করছে। সেখানে তাদের প্রশিক্ষণও চলছে।

র‌্যাব ওই সংগঠনের নাম সে সময় বলেনি। পাহাড়ে ‘কেএনএফ’ বা বম পার্টি নামে কোনো সশস্ত্র দলের অস্তিত্বের বিষয়েও এর আগে সরকারের কোনো বক্তব্য আসেনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রথমবারের মত বম পার্টির সক্রিয়তার বিষয়টি স্বীকার করে নিলেন।

তিনি বলেন, “জঙ্গি আস্তানা আর এই কেএনএফের আস্তানা পাশাপাশি হওয়ায় এটা মনে হচ্ছে… শুধু কেএনএফ কেন? সন্তু লারমারও একটি বাহিনী রয়েছে, এছাড়া আরও বিভিন্ন নামের বাহিনী রয়েছে। তারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করার প্রয়াস করছে।“

র‌্যাব জানিয়েছে, নতুন জঙ্গি দলের ‘পাহাড়ি যোগের’ তথ্য সামনে আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত অভিযান শুরু হয়েছে; যার অংশ হিসেবে দুর্গম এলাকায় করা হচ্ছে প্রচারপত্র বিলি, চলছে মাইকিং।

জঙ্গিদের অবস্থানের তথ্য প্রদানকারীকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে প্রচারপত্রে (লিফলেট)। পাশাপাশি জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

একই সঙ্গে প্রচারপত্রে ‘জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকদের’ তাদের হেফাজতে থাকা জঙ্গিদের শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, “তা না হলে আশ্রয় প্রদানকারীদের কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার বলেন, তিন পার্বত্য অঞ্চলেই (রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) পরিস্থিতি বুঝে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব এবং প্রয়োজনের সেনাবাহিনী ব্যবস্থা নিচ্ছে।

“বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আমাদের এলাকায় থাকতে দিচ্ছি না। যখনই টের পাচ্ছি যে কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী কিংবা কোনো জঙ্গি সংগঠন বাংলাদেশের যে কোনো এলাকায় অবস্থান করছে, তাদের সরিয়ে দিচ্ছি।“

এছাড়া জুম্ম জাতীয়তাবাদী নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এমএন লারমা) গঠিত জনসংহতি সমিতি ভেঙে তৈরি হওয়া কয়েকটি দল পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয়। তার মধ্যেই কেএনএফের সক্রিয় হয়ে ওঠার খবর আসছে গত কিছুদিন ধরে।

পাহাড়িরা কেএনএফ সংগঠনটিকে ‘বম পার্টি’ নামে চেনে। নিজেদের তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের অনগ্রসর জনজাতিগুলোর ‘প্রতিনিধিত্বকারী’ হিসেবে তুলে ধরছে।

এ সংগঠন ‘কুকি-চিন রাজ্যে’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চায়; যেখানে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরারা থাকবে না, থাকবে বম, খিয়াং, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি ও ম্রোরা।

Share if you like

Filter By Topic