চীনে সরকারের কঠোর কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জোরদার হতে থাকার মধ্যে সাংহাইয়ে শত শত বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।
রোববার রাতের বিক্ষোভে এই সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে গেলে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়।
বিক্ষোভকারীরা এদিন উহান এবং চেংডুতেও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। বেইজিংয়ে লোকজন মোমবাতি মিছিল করেছে।
তাছাড়া, বেইজিং এবং নানজিং শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সাংহাই শহরের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন বলেন, “আমি এখানে। কারণ, আমি আমার দেশকে ভালবাসি। কিন্তু সরকারকে ভালবাসি না… আমি মুক্তভাবে বাইরে যেতে চাই। কিন্তু পারছিনা। আমাদের কোভিড নীতি একটি খেলা। বিজ্ঞান কিংবা বাস্তবতার কোনও ভিত্তি এখানে নেই।”
রোববার সাংহাইয়ে উরুমছির নামে নামকরণ করা উলুমুকি রোডে ভারি পুলিশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিক্ষোভ শুরুর আগে সেখানে অনেকেই মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে উরুমছি শহরে নিহতদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
উরুমছিতে সম্প্রতি একটি ভবনে আগুন লেগে ১০ জন নিহত হয়। তারা ভবনে আটকা পড়ার জন্য কোভিড বিধিনিষেধকে দায়ী করা হচ্ছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।
তবে তারা শুক্রবার ওই দুর্ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে। কিন্তু তারপরও উত্তর-পশ্চিমের শহর উরুমছিতে বিক্ষোভ হয়েছে।
সাংহাইয়ে রোববার বিক্ষোভে নামা আরেকজন বলেছেন, “আমরা কেবল আমাদের মৌলিক মানবাধিকার চাই। আমরা কোভিড পরীক্ষা করানো ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতে পারি না।
“মানুষ সহিংস না। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে কোনও কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তার করছে। তারা আমাকে ধরার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমার আশেপাশের মানুষেরা আমাকে শক্ত করে ধরে পেছনে টানছিল, যাতে আমি পালাতে পারি।”
বার্তা সংস্থ রয়টার্সের একজন সাংবাদিক পুলিশকে বাসে করে কিছু মানুষকে তুলে নিয়ে যেতে দেখার কথা জানিয়েছেন।
চীন সরকারের কঠোর কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ রোববার তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। শনিবার রাতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং কমিউনিস্ট পার্টির পদত্যাগ চেয়ে সাংহাইয়ে বিক্ষোভ করে বহু মানুষ।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে ‘শি জিনপিং সরে দাঁড়ান’ ‘কমিউনিস্ট পার্টি সরে দাঁড়াও’ বলে স্লোগান দেয়। চীনে সাধারণত এমন দাবিতে গণমানুষের এমন বিক্ষোভ বিরল ঘটনা। কারণ, দেশটির আইন অনুসারে সরকার নিয়ে সরাসরি কোনও সমালোচনার ফল হতে পারে কঠোর শাস্তি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে মানুষের অসন্তোষকে বরাবরই আমলে নেয়নি চীন সরকার। শূন্য কোভিড নীতি নিয়েছিলেন শি জিনপিং। সম্প্রতি তিনি এ নীতি থেকে সরে না দাঁড়ানোর অঙ্গীকারও করেছেন।