ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলাগুলোর ৭ হাজার ৩০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে ২৫ লাখ মানুষ ঠাঁই নিতে পারবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, সিত্রাংয়ের যে বিস্তার, তাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৩ জেলায় এ ঝড় তাণ্ডব চালাতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ ঝড়ের অগ্রভাগ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছাবে সোমবার সন্ধ্যায়, আর মধ্যরাতে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল পাড়ি দেওয়া শুরু করবে। তখন বাতাসের গতি থাকবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার।
আবহাওয়া অফিস সোমবার সকাল থেকেই মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি সমন্বয়ে দুপুরে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, “৭ হাজার ৩০টি শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ২৫ লাখ মানুষ এসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবেন। সকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন নেওয়া শুরু হয়েছে।“
দুর্যোগপ্রবণ জেলাগুলোয় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে এনে তাদের জীবন রক্ষা করা। একটি লোকও যদি মৃত্যুবরণ না করেন, এটাই হবে সফলতা।“
সেইসঙ্গে খাদ্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং গবাদিপশুকে রক্ষা করার নির্দেশনাও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এসেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় সিত্রাং এর অগ্রভাগ আঘাত করবে আর মূল 'আই' আঘাত করবে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৭ টার দিকে। এখনও পর্যন্ত বুঝতে পারছি ১৩ টি জেলায় সিত্রাং তাণ্ড চালাবে।”
এই জেলাগুলো হল– বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী। এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ অঞ্চল মহেশখালী, হাতিয়া, সন্দ্বীপ এলাকাও ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে বরগুনা সদর, পাথরঘাটা ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি পড়বে বলে মনে করছেন এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড় সিডর ছিল সুপার সাইক্লোন, সিভিয়ার সাইক্লোনের পর আরেকটি স্তর আছে সেটিকে বলে ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন, তারপর সুপার সাইক্লোন।
“সিত্রাংয়ের বাতাসের গতিবেগ হবে ৮০ কিলোমিটার থেকে ১০০ কিলোমিটার, সুতরাং এই গতিবেগ হওয়ার কারণে এটিকে সিভিয়ার সাইক্লোন বলা হচ্ছে।“
‘সিত্রাং’ ভেরি সিভিয়ার বা সুপার সাইক্লোনের রূপ নেওয়ার আপাতত কোন সম্ভবনা নেই বলে জানান প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।