দেশের শিল্পখাতে গ্যাস সংকটের পেছনে ‘বৈশ্বিক সংকট’কে দায়ী করে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশেও কয়েক মাস ধরে গ্যাস সংকট চলছে।
“চলমান এই গ্যাস সংকট কীভাবে কাটানো যায়, তা নিয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ শুরু করেছি। এই পর্য়বেক্ষণে আমরা সার্বিক পরিস্থিতির খসড়া তৈরি করব। এরপর আমরা শিল্প মালিকদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করব। ওই বৈঠকে আমরা তাদের কাছ থেকে সকল ধরনের সমস্যা শুনব।”
“সমস্যা আসতেই পারে, তবে খুব শিগগিরই এই সমস্যা কেটে যাবে। আমরা আশা করছি, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে গ্যাস সংকটের সমাধান হবে,” বলেন তিনি।
বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে তিন দিনের সিরামিক মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বিশ্বের ২০টি দেশের ১২০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫০টি সিরামিক ব্র্যান্ড এতে অংশ নিয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
টিপু মুনশি বলেন, “এখনো আমাদের রপ্তানি প্রায় ৮৫ শতাংশই পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতা কমাতে সরকারের যে রপ্তানি বহুমূখীকরণের উদ্যোগ রয়েছে, তার মধ্যে সিরামিক অন্যতম প্রধান খাত।
“ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রপ্তানি খাত বিলিয়ন ডলার রপ্তানির ঘরে পৌঁছেছে। পরিকল্পনা মতো উদ্যোগ নিতে পারলে সিরামিক খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে সরকার প্রস্তুত।”
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, “সিরামিক খাতও একটি শ্রম ঘন শিল্প। আমাদের দেশে এখনো শ্রম সস্তা থাকায় এই খাতেরও বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে এই খাতে রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে সুযোগ রয়েছে। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে এই খাতও অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত হয়ে উঠতে পারে।”
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, “দেশে ইতোমধ্যেই সিরামিক, টেবিলওয়্যার, টাইলস্ ও স্যানিটারিওয়্যারের ৭০টিরও বেশি কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত বছর ৫০টির বেশি দেশে ৫০০ কোটি টাকার বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে। স্থানীয় বাজারেও বছরে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার সিরামিক পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
“গত ১০ বছরে সিরামিক খাতে উৎপাদন বেড়েছে ২০০ শতাংশ এবং বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বর্তমানে এই শিল্পে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ লাখ মানুষ এ খাতটির সঙ্গে জড়িত।”
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ঢাকায় বিসিএমইএ আয়োজিত এটি তৃতীয় প্রদর্শনী। কোনো প্রবেশ ফি ছাড়াই ক্রেতা বা দর্শনার্থীরা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা প্রদর্শন করতে পারবেন। মেলায় স্পট অর্ডারও নেওয়া হচ্ছে।
মেলার প্রিন্সিপাল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে আকিজ সিরামিকস প্লাটিনাম স্পন্সরস শেলটেক সিরামিকস ও ডিবিএল সিরামিকস এবং কো-স্পন্সর হিসেবে থাকছে মীর সিরামিক, খায়ের সিরামিক, বিএইচএল সিরামিক, এইচএলটি ডিএলটি টেকনোলোজি ও সাকমি।