ছয় সপ্তাহ আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যে শিক্ষকের গাড়ির সঙ্গে এক কিলোমিটার ছেঁচড়ে নিয়ে এক নারীর প্রাণ গিয়েছিল, সেই শিক্ষক আজাহার জাফর শাহ মারা গেছেন কারাবন্দি অবস্থায়।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে (৫৯) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত ২ ডিসেম্বর মোটরসাইকেলে শাহবাগ হয়ে হাজারীবাগে ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন রুবিনা আক্তার নামের এক নারী। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আজাহার জাফর শাহর প্রাইভেট কারের ধাক্কায় রুবিনা ছিটকে ওই গাড়ির নিচে আটকে যান। ওই অবস্থায় না থেমে গাড়ি চালিয়ে যান জাফর শাহ।
পেছন ও আশপাশ থেকে অনেকে চিৎকার করলেও তিনি সেদিন গাড়ি থামাননি। এক কিলোমিটার ছেঁচড়ে যাওয়ার পর তার গাড়ি আটকে জনতা রুবিনার ক্ষতবিক্ষত দেহ চাকার নিচ থেকে উদ্ধার করে। তখন তাকে আর বাঁচানোর উপায় ছিল না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে গুরুতর আহত হলে জাফর শাহকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেদিন।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক শেখ সুজাউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই ঘটনার পর থেকেই জাফর শাহ আটক ছিলেন। কারাগারে পাঠানোর পর অনেক দিন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ছিলেন। তার হার্টের রোগ ছিল।
“কিছুদিন আগে তাকে কারাগারে নেওয়া হয় এবং কারাগারের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন জাফর। শুক্রবার বিকালে অসুস্থ বোধ করলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।“
ঢাকা মেডিকেল ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, জাফর শাহকে দুই কারারক্ষী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখনই চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার দিনই গভীর রাতে নিহত রুবিনার ভাই জাকির হোসেন সড়ক পরিবহন আইনে শাহবাগ থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় জাফর শাহ গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।