ইউক্রেইনের দক্ষিণাঞ্চলে রুশ বাহিনীর ছেড়ে যাওয়া কয়েক ডজন ছোট শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেইনীয় সেনারা।
খেরসন প্রদেশের কৌশলগভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী শহর খেরসন থেকে মস্কো তাদের বাহিনীগুলো সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার এ দাবি জানায় তারা।
ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী এসব শহরে বহু স্থল মাইন পেতে রেখে গেছে।
ইউক্রেইনীয় একজন সামরিক বিশ্লেষক ও মিডিয়া ভাষ্যকার বলেছেন, ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো খেরসন শহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, খেরসন শহর ছাড়তে রুশ বাহিনীর অন্তত এক সপ্তাহ লাগবে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি জানান, এখনও ওই অঞ্চলে রাশিয়ার ৪০ হাজার সেনা আছে এবং গোয়েন্দা তথ্যে দেখা গেছে তাদের সেনারা শহরটিতে ও এর আশপাশে অবস্থান করছে।
বুধবার এক ঘোষণায় রাশিয়া জানিয়েছে, তারা খেরসনসহ নিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে তাদের বাহিনীগুলো প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর খেরসনই একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী যা রাশিয়া দখলে নিতে পেরেছিল।
অপক্ষাকৃত ছোট ইউক্রেইনীয় সামরিক বাহিনীর রুশদের হটিয়ে দেওয়ার তৃতীয় ঘটনা হতে পারে এটি। এর আগে মার্চে রাজধানী কিইভমুখি রুশ বাহিনীকে হটিয়ে দিয়েছিল তারা, পরে উত্তরপূর্বাঞ্চল থেকেও দখলদারদের হটিয়ে দিয়েছিল।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ইউক্রেইনের যে চারটি অঞ্চল রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন খেরসন তার একটি। তখন অধিকাংশ দেশই তার এই পদক্ষেপকে অবৈধ অভিহিত করে এর নিন্দা করেছিল।
ইউক্রেইনীয় সামরিক বিশ্লেষক ইউরি বুতুসোভ টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে বলেন, খেরসন শহর ইউক্রেইনীয় কামানগুলোর নাগালের মধ্যে আছে এবং শহরটির সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা ইউক্রেইনীয় টহল দলের অবস্থান ১৮ কিলোমিটারের মধ্যে।
তিনি বলেন, “নদী পারাপারের এলাকায় পশ্চাদপসরণকারী শত্রুর কাঁধের দিক দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে খেরসনে প্রবেশের চেষ্টা করছে ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো। সেখানে রুশ বাহিনীগুলো জড়ো হয়েছে, গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।”
তবে যুদ্ধক্ষেত্রের বিষয়ে দেওয়া এসব তথ্য রয়টার্স যাচাই করতে পারেনি।
দক্ষিণে এগিয়ে যাওয়ার পথে ইউক্রেইনীয় বাহিনী ৪১টি বসতি মুক্ত করেছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ভিডিও বক্তৃতায় জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
রাশিয়ার বাহিনীগুলোর কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করা এলাকাগুলোতে মাইন অপসারণকারী সেনাদের পাঠানো হচ্ছে এবং রুশ বাহিনী ওইসব এলাকায় কয়েক হাজার অবিস্ফোরিত স্থলমাইন ও অস্ত্রশস্ত্র ফেলে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি জানান, প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মাইনমুক্ত করতে হবে।