ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারায় বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার ২৭ দিনের মাথায় বন্ধ হয়ে গেছে বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র।
কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট থেকে গড়ে প্রতিদিন ৫৬০-৫৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছিল। এর মধ্যে সাড়ে ৪০০ মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে এবং বাকিটা খুলনা অঞ্চলে সরবরাহ করা হতো।
কিন্তু শনিবার সকালে থেকে কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রটির ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায় বলে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আনোয়ারুল আজীম জানান। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
বিআইএফপিসিএলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়লা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার অনুমোদন দিচ্ছে না। বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) জানানো হয়েছে।
একাধিকবার বাংলাদেশ বাংককে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্রও সরবারাহ করা হয়েছে। কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু এলসি খোলার ব্যাপারে কোনো সুরাহা আসেনি।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ডিজিএম আনোয়ারুল আজিম রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা পেমেন্ট করতে পারছি না, এজন্য আমরা কয়লা পাচ্ছি না। নিয়মিত উৎপাদনের জন্য আমাদের প্রায় পাঁচ হাজার মেট্টিক টন কয়লা লাগে। কয়লা না থাকায় কেন্দ্রটি এখন বন্ধ রয়েছে।”
কয়লা সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মজুদ কয়লা ছিল। এটা দিয়েই আমরা চলছিলাম। আমাদের পরিকল্পনা ছিল এর মধ্যে পরবর্তী শিপমেন্ট চলে এলে আমরা প্রবলেমে পড়ব না।”
“পেমেন্টের বিষয়ে আমরা কয়েক দফা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথাও বলেছি। এখনও যোগাযোগ করছি। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) পেমেন্টটা করতে পারছে না।“
ডিজিএম আরও বলেন, “ইন্দোনেশিয়া থেকে আমাদের কয়লা আসে। সেখানে বন্দরে জাহাজ লোড দেওয়া আছে। শুধু পেমেন্টের কারণে কয়লা আসছে না। ঋণপত্র পাওয়া নিশ্চিত হলে জাহাজটি বাংলাদেশের পথে রওনা হবে।”
বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, গত সপ্তাহে কারিগরি ত্রুটির কারণে একদিন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ছিল। তখন ঢাকার কিছু এলাকায় লোডশেডিং করতে হয়েছিল।
কবে নাগাদ আবার উৎপাদনে ফিরতে পারে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ বাংকের অনুমতি পাওয়ার পর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে কয়লা আসবে। কয়লা পৌঁছালে কেন্দ্রটি আবার সচল করা যাবে।