কুমিল্লায় জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত; পাশাপাশি বেড়ে চলেছে ঘন কুয়াশার আধিপত্য। এ পরিস্থিতিতে মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার থেকেই কুমিল্লায় ঘন কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে চলছে। শুক্রবারও সূর্যের মুখ তেমন একটা দেখা যায়নি; এদিন বিকাল থেকেই কুয়াশার চাঁদরে ঢাকতে শুরু করে পুরো জেলা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় একশো কিলোমিটার এলাকা পড়েছে কুমিল্লা জেলায়। ঘন কুয়াশার কারণে ব্যস্ততম এ সড়কে যান চলাচলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে। ফগ লাইট ব্যবহার করেও অনেক সময় সামনের পথ দেখতে পারছেন না চালকরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, “সঠিক নিয়ম মেনে গাড়ি চালালে ঘন কুয়াশায় খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না। এছাড়া আমাদের দেশের চালকরা ঘন কুয়াশায় গাড়ি চালাতে অভ্যস্ত।
“এরপরও আমাদের পক্ষ থেকে পরিবহনের মালিক ও চালকদের এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরাও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দিনরাত মাঠে কাজ করছেন।”
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম থেকে কুমিল্লা সেনানিবাস পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালেও হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন। এদিন সকাল ৯টার পর কুয়াশার তীব্রতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ আরও বলেন, বুধবার থেকেই ঘন কুয়াশায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঢেকে আছে। এ অবস্থায় সকল যানবাহনে ফগ লাইট ব্যবহারে গুরুত্ব দিয়ে এবং গতি নিয়ন্ত্রণে রেখে গাড়ি চালাতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি গাড়িকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে হবে।
“চালকদের মনে রাখতে হবে সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।”
শুক্রবার সকালে কুমিল্লা সদরের আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন একটি হোটেলে যাত্রা বিরতি করে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একটি বাস।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপকালে বাসচালক আবুল কালাম বলেন, “গত দুই-তিন ধরে বাস চালাতে খুবই সতর্ক থাকতে হচ্ছে চালকদের। ফগ লাইট ব্যবহার করেও অনেক সময় সামনের গাড়ি দেখা যাচ্ছে না। চার ঘণ্টার রাস্তা পার হতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা লাগছে। সতকর্তার সঙ্গে গাড়ি চালাচ্ছি।”
ফেনী থেকে ঢাকাগামী মহিন উদ্দিন নামের এক ট্রাক চালক বলেন, “ঘন কুয়াশায় গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাঁক ও লিংক রোডগুলো পার হওয়ার সময়ও অধিত সতর্ক থাকতে হচ্ছে।”
এমন কুয়াশা গত বছরও দেখা গেছে জানিয়ে কুমিল্লার মাইন উদ্দিন নামের এক মাইক্রোবাস চালক বলেন, “অর্ধেক গতিতেও গাড়ি চালানো যাচ্ছে না মহাসড়কে। রাস্তা ফাঁকা থাকলেও ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।”