মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা এবং নাফ নদীতে নাব্য সঙ্কটের কারণে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চলতি মৌসুমে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে এই রুটে পর্যটকদের বহনকারি ‘এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস’ জাহাজটি সেন্টমার্টিনের উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন; প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে বঙ্গোপসাগরের বুকে এ দ্বীপে ঘুরতে যান বিপুল সংখ্যক পর্যটক। এ বছর এই দ্বীপে যাতায়াতের প্রধান ও জনপ্রিয় পথ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গোপসাগরের বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ ভ্রমণে যেতে পারবেন পর্যটকরা।
এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস জাহাজটির কক্সবাজার কার্যালয়ের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, সকালে কক্সবাজার থেকে সাড়ে সাতশ যাত্রী নিয়ে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস জাহাজ রওনা দিয়েছে। বেলা ১২টার মধ্যে জাহাজটি সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে পৌঁছার কথা। আর বিকাল সাড়ে ৩টায় যাত্রীদের নিয়ে জাহাজটি সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারের উদ্দ্যেশে রওনা দেবে।
টিকেটের দাম কত টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "জাহাজের যাত্রীদের জন্য ১০ ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন মূল্যের টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা পর্যন্ত টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।"
হোসাইনুল জানান, মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং নাফ নদীতে নাব্য সঙ্কটের কারণে সরকার চলতি মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। তবে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে।
তবে প্রথমদিনে সকলকে ‘চাহিদা মত’ জাহাজের টিকেট দেওয়া সম্ভব হয়নি। জাহাজটি পূর্ন ধারণ ক্ষমতার যাত্রী নিয়েই সেন্টমার্টিনের উদ্দ্যেশে রওনা দিয়েছে।
পর্যায়ক্রমে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে আরও কয়েকটি জাহাজ পর্যটকদের পরিবহনে যুক্ত হবে বলে জানান এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেসের এ কর্মকর্তা।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) এর সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। কিন্তু হঠাৎ করে চলতি মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা বিপাকে পড়েছেন।
“বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হলেও পর্যটকদের টিকেটের চাহিদা ছিল অতিরিক্ত। তাই প্রথমদিনে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়।“
এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, “সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছে। জাহাজে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দলও পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।”
সাধারণত অক্টোবর মাসের শুরু থেকে এই নৌ-পথে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। পর্যটকরা এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত ভ্রমণে যেতে পারেন। পরে বর্ষা মৌসুমে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে নিরাপত্তা বিবেচনায় এই পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।