প্রতিটা বড় সাফল্যের পেছনে থাকে নিদারুণ কোনো ব্যর্থতা। বিদায় বেলায় সেটাই সঙ্গী হলো পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর। তাদের বিদায় করে আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে সেমি-ফাইনালে গেল মরক্কো। অসম্ভব কষ্ট বুকে চেপে, অনেক অপ্রাপ্তির হিসাব মেলাতে মেলাতে চোখের জলে বিশ্ব মঞ্চ ছাড়লেন রোনালদো।
শেষ ষোলোর মতো কোয়ার্টার-ফাইনালেও তাকে শুরুর একাদশে রাখেননি কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ইউসেফ এন-নেসিরির গোলে পিছিয়ে পড়ে পর্তুগাল। ক্যামেরা খুঁজে নেয় বেঞ্চে বসা রোনালদোকে। ডিফেন্ডার আর গোলরক্ষকের মারাত্মক ভুল দেখেন তিনি অসহায়ের মতো।
৫১তম মিনিটে রুবেন নেভেসের জায়গায় সুযোগ মেলে বদলি নামার। দীর্ঘ দিনের সতীর্থ পেপে এগিয়ে এসে পরিয়ে দেন অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড। সেভাবে বল খুব একটা সাজিয়ে দেননি কেউ। বলের সন্ধানে তাকে নেমে যেতে হয়েছে অনেক নিচে।
দুয়েকবার দেখানোর চেষ্টা করেছেন ঝলক। চমৎকার কিছু পাসও বাড়িয়েছেন। ডি বক্সে থেকে ইশারা দিয়েছেন বল বাড়ানোর। কিন্তু খুব বেশি বলের জোগান তিনি পাননি। ৯০তম মিনিটে বাঁদিক থেকে একটা শট নিয়েছিলেন, হাত থেকে ছুটে গেলেও দ্রুতই ঝাঁপিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো।
যোগ করা সময়ে একটা ক্রসে লাফিয়ে অনেকটা উঁচুতে উঠলেও বলের নাগাল পাননি। পেছনে থাকা পেপে হেড করলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
শেষ বাঁশি বাজা মাত্র উৎসবে মাতে মরক্কো। অপ্রাপ্তির হিসেব মেলাতে মেলাতে চোখে জল ভরে আসে রোনালদোর। খেলা শেষ হওয়ার পর দ্রুত মাঠ ছাড়েন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড। টানেলে হেঁটে যাওয়ার সময় চোখ মুছতে দেখা যায় আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার ও গোল করার এই রেকর্ডধারীকে।
কী দারুণভাবেই না শুরু হয়েছিল আসর। ঘানার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই গোল করে গড়েন প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা পাঁচ আসরে গোল করার অনন্য কীর্তি। এরপর থেকে যাত্রা যেন উল্টো পথে। পরের দুই ম্যাচে মেটাতে পারেননি প্রত্যাশা।
নকআউট পর্বের দুই ম্যাচেই খেলেন বদলি হিসেবে। কোনোটিতেই পাননি জালের দেখা। বড় আশায় ছিলেন, এবার কাটাতে পারবেন গেরো, গোল পাবেন নক আউট পর্বে। কিন্তু ঠিক মতো সুযোগই যে পেলেন না! আক্ষেপ নিয়েই তাই বিশ্বকাপ শেষ হলো মহানায়কের।