মেট্রোরেলের জন্য পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠন সম্পন্ন না হওয়ায় এ রেলপথের সার্বিক নিরাপত্তায় ‘আপাতত’ঢাকা মহানগর পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।
মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি স্টেশনে সার্বিক প্রস্তুতি ঘুরে দেখার পর ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠন হওয়ার আগ পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ঢাকা মহানগর পুলিশই দেবে।
“এমআরটি পুলিশ গঠনের ফাইলটি সচিব কমিটিতে রয়েছে। এই ইউনিট গঠনের অনুমোদনের আগ পর্যন্ত মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা দিবে ডিএমপি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
মহানগর পুলিশের উত্তরা, মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগের উপর দিয়ে চলবে মেট্রোরেল; উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের মেট্রোরেলের ১১ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার পথে নয়টি স্টেশন।
তবে প্রথম দিকে কেবল দুই স্টেশনেই থামবে মেট্রোরেল। বুধবার উদ্বোধনের পর প্রতিদিন (মঙ্গলবার ছাড়া) চার ঘণ্টা করে চলবে ট্রেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্রথম ও শেষ স্টেশনে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, মাঝের সাতটি স্টেশন এখন চালু না হলেও ৯ জন করে পুলিশ সদস্য ওইসব স্টেশনে পালা বদল করে দায়িত্ব পালন করবেন। এখন স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় ও রিজার্ভ পুলিশের সদস্যরা।
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিটি স্টেশনে দুটি প্রবেশ ও দুটি বহির্গমন পথ রয়েছে। আটজন পুলিশ সদস্য এসব প্রবেশ পথে দায়িত্ব পালন করবেন আর একজন অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তদারকি করবেন।”
তিনি বলেন, “ভবন (স্টেশন) নিরাপত্তা আর স্টেশনের আশপাশে দোকানপাট করতে না দেওয়া, ফুটপাত পরিষ্কার রাখা; মেট্রোরেলে যারা উঠবেন ও নামবেন তাদের শৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ।”
উদ্বোধনের পর আরও জনবল দরকার হলে তাও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মিরপুর বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা।
মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় ৩৫৭ সদস্যের এমআরটি পুলিশ রাখার প্রস্তাব এলেও তা এখনও তা গঠিত হয়নি।
এছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে প্রতিটি স্টেশনে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান থাকবে, যে কারণে প্রত্যেকটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাব করেছে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিটের (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছিলেন, “টিকেট বিক্রি বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তো কর্তৃপক্ষই দেখবে। নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশ দেখবে। প্রতিটি স্টেশনে একটি কন্ট্রল রুম থাকবে। মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও।”
তবে মেট্রোরেলের নিরাপত্তার দায়িত্বটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার পরামর্শও এসেছে।
এ বিষয়ে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত অনেক বিষয় থাকায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে জবাবদিহি ও টেকসই নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা কম থাকত।”