এবার রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন বসছে ঢাকায়


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: October 13, 2022 13:54:30 | Updated: October 14, 2022 12:33:56


এবার রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন বসছে ঢাকায়

কোভিড মহামারীতে এক বছর বিরতির পর সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আবার আয়োজিত হতে যাচ্ছে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকায় তিন দিনের এবারের আয়োজনে নেবেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাত শতাধিক শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক।

সম্মেলনে রবীন্দ্রপদক দিয়ে গুণি সম্মাননা জানানো হবে দুই গুণি শিল্পী, শিক্ষক ও সংগঠককে। তারা হলেন প্রয়াত সঙ্গীতসাধক নীলোৎপল সাধ্য ও মিতা হক।

বুধবার ঢাকার ছায়ানটে সংবাদ সম্মেলনে এ আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় এ সম্মেলন এক বছর ঢাকায়, অন্য বছর অন্য জেলায় আয়োজন করা হয়। সবশেষ ২০২০ সালে হয়েছিল সিরাজগঞ্জে।

ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় শুক্রবার সকালে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের আয়োজনে ৪০তম এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন। প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

উদ্বোধন সকাল সাড়ে নয়টায় বোধনসঙ্গীত ‘আপনি অবশ হলি, তবে বল দিবি তুই কারে?’- এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে উৎসব। তিন দিনের সান্ধ্য অধিবেশন সাজানো হয়েছে গীতি আলেখ্য, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে।

উদ্বোধনী আয়োজনে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলিন পরিষদের নির্বাহী সভাপতি আতিউর রহমান রচিত গীতি- আলেখ্য 'সম্প্রীতির বাংলাদেশ'।

প্রথম দিনের আয়োজনে পরিবেশিত হবে গীতি আলেখ্য  'তোমায় নতুন করে পাব'৷ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যেসব গান রণাঙ্গনে গীত হয়েছে, সেগুলো নিয়ে মফিদুল হক এই গীতি আলেখ্য গ্রন্থনা করেছেন।

দ্বিতীয় দিন শনিবার বিকালে 'সম্প্রীতির সমাজ গঠনে সংস্কৃতির দায়' শিরোনামে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন মফিদুল হক।

আলোচনায় অংশ নেবেন নাসিরউদ্দীন ইউসুফ ও অধ্যাপক সাধন ঘোষ।

উৎসবের সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায়। সমাপনী অধিবেশনে রবীন্দ্রপদক দিয়ে গুণি-সম্মাননা জানানো হবে প্রয়াত সঙ্গীতসাধক নীলোৎপল সাধ্য ও মিতা হককে।

এছাড়া শুক্রবার বেলা আড়াইটায় জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতার কিশোর বিভাগের চূড়ান্ত পর্ব এবং শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সাধারণ বিভাগের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সারওয়ার আলী বলেন, "সমাজে ধর্মান্ধতা ও নারী বিদ্বেষী প্রচারণা বাড়ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে সমাজে সম্প্রীতি৷"

বুলবুল ইসলাম বলেন, "রবীন্দ্রনাথ তার নানা রচনা ও ভাষণে সমাজে মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন, সমাজের নানা ঘাত প্রতিঘাতের ক্ষত সারিয়ে তোলার পরামর্শ রেখেছেন।

“আমরা বিশ্বাস করি, রবীন্দ্রনাথের কর্ম ও জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজে মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠা এবং বাঙালি সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।"

১৯৭৯ সালে শিল্পী জাহিদুর রহিমের প্রয়াণ দিবসে কাজ শুরু হয়েছিল 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ' এর। দেশব্যাপী বৃহত্তর পরিসরে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার লক্ষ্য নিয়ে পরে বাঙালির চিরকালের সঙ্গী রবীন্দ্রনাথের নাম যুক্ত করে সংগঠনের নাম করা হয় জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ।

এরপর এ সংগঠনের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে প্রতিবন্ধকতা দূর করে বাঙালি সংস্কৃতির সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক বিকাশের ধারাকে সমৃদ্ধ ও গতিশীল করে তোলার উদ্দেশ্যে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা।

নাম পরিবর্তন হলেও প্রয়াত স্মরণীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী জাহিদুর রহিমের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য 'জাহিদুর রহিম স্মৃতি পুরস্কার' প্রতিযোগিতার আয়োজন বহাল রয়েছে। বর্তমানে সম্মিলন পরিষদের সক্রিয় শাখা ৮৪টি।

বুলবুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দিকের বার্ষিক অধিবেশনগুলো শুধু রাজধানী ঢাকাতেই হত। শাখাগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে এবং সংস্কৃতিচর্চার প্রসারে ১৯৮৪ সালে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বার্ষিক অধিবেশন হচ্ছে এক বছর হচ্ছে ঢাকায়, পরের বছর অন্য জেলায়।

সঙ্গীত প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে এক বছর পর পর শুধু ঢাকার অধিবেশনে। প্রতি বছরই গুণীদের সম্মাননা জানায় পরিষদ। নির্বাচিত গুণীকে রবীন্দ্র-পদক ও অর্থ প্রদান করা হয় বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলন পরিষদের সহ সভাপতি সারওয়ার আলী ও সোহরাব উদ্দিন, তিন সম্পাদক লিলি ইসলাম, শর্মিলা বন্দোপাধ্যায় ও রোকাইয়া হাসিনা নীলি উপস্থিত ছিলেন।

এতে জানানো হয়, এবারের আয়োজনে সহায়তা দিচ্ছে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড ও সোনালী ব্যাংক লিমিটেড।

 

Share if you like