ক্যান্সার আর রেহাই দিল না, একটি বছর রোগে শোকে ভুগে চিরবিদায় নিলেন একুশে পদকজয়ী অভিনেতা মাসুম আজিজ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চার দিন আগে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল এই অভিনেতাকে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
একাধারে অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম আজিজ মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে তিনি চার দশকের বেশি সময় ধরে নিয়মিত অভিনয় করছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
মাসুম আজিজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, “মাসুম আজিজ দীর্ঘ কর্মজীবনে চারশর বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। তার মত গুণী অভিনেতার মৃত্যু দেশের নাট্যাঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন মাসুম আজিজ। চলতি বছরের শুরুর দিকে তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর থেকে বাসা আর হাসপাতালেই কাটছিল এ অভিনেতার দিনগুলো।
রোববারই তার চিকিৎসায় সরকারের পক্ষ থেকে মেডিকেল বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
তিনি বলেছেন, “দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হোক এবং তার (মাসুম আজিজ) দেখভালের দায়িত্ব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বহন করুক।”
লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর কথাও ভাবছিলেন পরিবারের সদস্যরা। স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় দুশ্চিন্তা ছিল তাদের।
১৯৫২ সালে পাবনায় মাসুম আজিজের জন্ম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি থিয়েটারে সক্রিয় হন। প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন ১৯৮৫ সালে।
‘ঘানি’, ‘এই তো প্রেম’. ‘গহীনে শব্দ’, ‘গাড়িওয়ালা’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি।
মাসুম আজিজ একজন নাট্য নির্মাতা ও চলচ্চিত্রকার হিসাবেও পরিচিত। সরকারি অনুদানে তার পরিচালিত সিনেমা ‘সনাতন গল্প’ মুক্তি পায় ২০১৮ সালে।
মঞ্চে মাসুম আজিজের রচনা ও নির্দেশনায় সবশেষে নাটক ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’। ঢাকা পদাতিক এ নাটকটি নিয়মিত মঞ্চায়ন করছে।
অভিনয়ে অবদানের জন্য ২০২২ সালে একুশে পদক পান মাসুম আজিজ; ‘ঘানি’ সিনেমায় শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেতা হিসাবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।