ইসির রোডম্যাপ: মহানগর ও জেলা সদরে ইভিএমে ভোট


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: September 14, 2022 14:38:59 | Updated: September 14, 2022 18:05:59


ইসির রোডম্যাপ: মহানগর ও জেলা সদরে ইভিএমে ভোট

মহানগর আর জেলা সদরের দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের পাশাপাশি প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরায় নজরদারির লক্ষ্য ঠিক করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার ইসির এই ‘রোডম্যাপ’ সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক বিভেদ আর প্রশ্নের মোকাবেলা তাদের করতে হয়েছে। তারপরও গত ছয় মাসে ‘কিছুটা হলেও’ আস্থা অর্জনের দিকে ইসি এগিয়ে বলে তার বিশ্বাস।  খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর সাড়ে ১৫ মাস; এই সময়ের মধ্যে সব দলের আস্থা অর্জন করে ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যাশার কথাই বললেন এই নির্বাচন কমিশনার।

অসুস্থ থাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তাই জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান রোডম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন।

তিনি বলেন, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্দেশ্য একটাই- ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন করা।

 “আমরা অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন এবং আমরা অনেক আস্থার ঘাটতির মধ্যে আছি। আমাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে প্রমাণ দিয়েছি, আমরা কিছুটা হলেও আগের থেকে আস্থা অর্জনে এগিয়ে গেছি।”

এ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে নিজেদের ‘জবাবদিহিতা ও বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতাও’ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন এ নির্বাচন কমিশনার।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এমিলি বলেন, “পরিকল্পনা ধরেই এগিয়ে যাব আমরা। সবার সহযোগিতা পেলে অংশগ্রহণমূলক ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষেম হব।”

 ‘বাস্তবভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক’ এ রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে ইসির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছোনো যাবে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, সেজন অংশীজনদের সবার সহযোগিতাও দরকার হবে।

পনের বছর আগে এ টি এম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির সময় সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা ধরে এগোনোর চল শুরু হয় কমিশনে। পরের কমিশনগুলো সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেও কিছুটা ভিন্নতা এনে ‘রোডম্যাপ’ উপস্থাপন করে আসছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বর্তমান ইসি গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়। এর পরপরই তারা রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞ, ইভিএম কারিগরি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদদের নিয়ে সংলাপ শুরু করে।

বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংলাপে পাওয়া মতামত পর্যালোচনা করে আইন সংস্কার, ইভিএমে ভোটগ্রহণের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদনও নেওয়া হচ্ছে।

হালনাগাদ ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহের কাজও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা রয়েছে।

২০১৯ সালের ৩০ জানুয়রি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সে অনুযায়ী ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পরের বছর জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে হবে। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসি।

সে কথা তুলে ধরে নির্বাচন কশিমনার মো. আলমগীর বলেন, “এ কর্মপরিকল্পনায় সবার মতামত রাখার চেষ্টা করেছি আমরা। যেসব বিষয় আমাদের আওতায় রয়েছে তা রাখা হয়েছে। তবে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সুপারিশগুলো রাখা হয়নি।”

 “রোডম্যাপের চ্যালেঞ্জগুলো ধরে, সেগুলো মোকাবেলা করে সব কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। ভোটের এখনও এক বছর চার মাস বাকি। অনেকে ইসি নিয়ে আস্থাহীনতায় থাকলেও আগামীতে কর্মকাণ্ড দেখে আস্থাশীল হবেন।”

ইভিএম ব্যবহার ও সিসি ক্যামেরা

প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা রাখার কথা বলা হয়েছে ইসির কর্মপরিকল্পনায়। ইভিএম ব্যবহার করা হবে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে। সেক্ষেত্রে কেবল মহানগর এবং জেলা সদরের আসনগুলাতে ভোট হবে ইভিএমে।

নির্বাচনের পথে ইসির সামনে ১৪টি চ্যালেঞ্জ এবং সেগুলো থেকে উত্তরণের ১৯টি উপায় নিয়ে বলা হয়েছ রোডম্যাপে। ভোটের আগের কাজের সূচিও প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে।

কখন কী?

আইন সংস্কার: অগাস্ট ২০২২ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সংলাপ: মার্চ ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২২

সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস: জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জুন ২০২৩

প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা তৈরি: অগাস্ট ২০২২ থেকে অগাস্ট ২০২৩

নতুন দল নিবন্ধন: সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে জুন ২০২৩

ভোটার তালিকা: মে ২০২২ হালনাগাদ শুরু; মার্চ ২০২৩ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ; তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সংসদীয় আসন অনুযায়ী ৩০০ এলাকার তালিকা প্রস্তুতি।

ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ: জুন ২০২৩ থেকে ২০২৩ অগাস্ট; তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ।

প্রশিক্ষণ: ২০২৩ জানুয়ারি থেকে তফসিল ঘোষণার পরেও চলবে

পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন: জানুয়ারি ২০২৩ থেকে অগাস্ট ২০২৩

Share if you like