ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন জর্জিয়া মেলোনি। মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও বেছে নিয়েছেন তিনি।
শনিবার দেশটির স্থানীয় সময় সকালে নতুন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করবে, এরপর আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হবে তারা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এর মাধ্যমে ইতালি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার পেতে যাচ্ছে।
মেলোনির (৪৫) নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী দল ব্রাদার্স অফ ইতালি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির ফরচা ইতালিয়া ও মাত্তেও সালভিনির লিগের সঙ্গে জোট বেঁধে গত মাসের জাতীয় নির্বাচনে জয় পায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইতালির ৬৮তম সরকারের প্রধান হচ্ছেন মেলোনি। এ সরকার ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাবেক প্রধান মারিও দ্রাগির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রশাসনের স্থলাভিষিক্ত হবে। দ্রাগি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার শেষ দায়িত্বের একটি পালন করতে শুক্রবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষিত মেলোনিকে কঠিন সব চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে; এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মন্দার হুমকি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও ইউক্রেইন যুদ্ধকে ঘিরে একটি ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা।
শুক্রবার রাজধানী রোমের কুইরিনালে প্রাসাদে প্রেসিডেন্ট সের্জিও মাত্তারেল্লা সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মেলোনি। এরপর প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কর্মকর্তা উগো জাম্পেত্তি সাংবাদিকদের বলেন, “জর্জিয়া মেলোনি নির্দেশ মেনে তার মন্ত্রীদের তালিকা জমা দিয়েছেন।”
তালিকা অনুযায়ী, ব্রাদার্স অব ইতালির রাজনীতিকরা মন্ত্রিসভার নয়টি পদ পাচ্ছে আর লিগ ও ফরচা পার্টি উভয়েই পাঁচটি করে পদ পাচ্ছে, টেকনোক্রাটরা পাবেন বাকি পাঁচটি পদ।
লিগের জাংকার্লো জর্জিয়েত্তি দেশটির অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন আর ফরচা পার্টির আন্তোনিও তইয়ানি সামলাবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আগে ধারণা করা হলেও বার্লুসকোনি (৮৬) মন্ত্রিসভায় কোনো ভূমিকা নেননি, তিনি সেনেটে বসবেন; আর লিগের নেতা সালভিনি অবকাঠামো মন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, বার্লুসকোনিকে বারবার মেলোনির কর্তৃত্বকে অবমূল্যায়ন করার চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে, এতে জোটের মধ্যে উত্তেজনার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বার্লুসকোনি ফরচা ইতালিয়ার আইনপ্রণেতাদের বলেছিলেন, তিনি যুদ্ধের জন্য ইউক্রেইনকে দায় দেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে উপহার ও ‘মধুর চিঠি’ বিনিময় করেছেন।
এরপর জোটের ওপর নিজের কর্তৃত্ব জাহির করে মেলোনি বলেছেন, তার প্রশাসন দৃঢ়ভাবে নেটোপন্থি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থি হবে।
“এই মূলভিত্তির সঙ্গে যিনি একমত হবে না তিনি নতুন সরকারের অংশ হতে পারবেন না,” বলেছেন তিনি।