ইউক্রেইনে সম্প্রতি কয়েকটি অঞ্চলে যুদ্ধে হেরে গিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে রুশ বাহিনী। এ অবস্থায় মস্কোকে সেখানে স্বল্প ক্ষমতার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন চেচনিয়া অঞ্চলের প্রধান রমজান কাদিরভ।
রাশিয়ার চেচনিয়া অঞ্চলের এই নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে শনিবার এক পোস্টে লেখেন, ‘‘আমার মতে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, দ্রুত সীমান্ত এলাকায় সামরিক আইন জারি করা এবং স্বল্প ক্ষমতার পরমাণু অস্ত্রও ব্যবহার করা উচিত।”
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেইনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীর হেরে যাওয়া ও পিছু হটার খবর আসছে। গত মাসে খারকিভের বিশাল অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হওয়ার পর সর্বশেষ দেশটির পূর্বের লেমান নগরীতে রুশ বাহিনীর হেরে যাওয়া যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের বড় পরাজয় বলে বিবেচিত হচ্ছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
নিজেদের শক্তঘাঁটিতে এভাবে হেরে যাওয়ায় রাশিয়ার শীর্ষ কমান্ডারদের তীব্র সমালোচনাও করেছেন কাদিরভ।
কাদিরভের পোস্টের একদিন আগেই ইউক্রেইনের চার অঞ্চল জাপোরিজিয়া, খেরসন, দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
লেমান নগরী দোনেৎস্ক অঞ্চলে অবস্থিত। তাই লেমানে হেরে যাওয়া রাশিয়ার জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে।
বিশ্বের যে দুএকটি দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে রাশিয়া তার অন্যতম। তাদের কাছে স্বল্প ক্ষমতার ট্যাকটিক্যাল পরমাণু অস্ত্রও রয়েছে। যেটি বিরোধী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
কাদিরভ ছাড়াও পুতিনের আরো কয়েকজন মিত্র এর আগে তাকে ইউক্রেইনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভও রয়েছেন। তবে কাদিরভ স্পষ্ট করে এবং যত দ্রুত সম্ভব পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলেছেন।
চেচনিয়ার ককেশাস অঞ্চলের প্রভাবশালী শাসক কাদিরভ ইউক্রেইন যুদ্ধের পক্ষে একজন সোচ্চার প্রচারক। চেচেন বাহিনী সেখানে রুশ সেনাবাহিনীর ভ্যানগার্ডের অংশ হয়ে উঠেছে।
বিশ্বাস করা হয়, কাদিরভ প্রেসিডেন্ট পুতিনের খুবই ঘনিষ্ঠজন। পুতিনই তার হাতে ২০০৭ সালে অস্থির চেচনিয়ার শাসনভার তুলে দিয়েছিলেন।
নিজের পোস্টে কাদিরভ লেমান যুদ্ধে রুশ বাহিনীর কমান্ডার কর্নেল-জেনারেল আলেক্সান্ডার লাপিনকে কড়া ভষায় তিরষ্কার করে তাকে ‘মাঝারিমানের’ বলে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, ‘‘তাকে অবনমিত করে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে পাঠানো উচিত। সেইসঙ্গে তার পদকগুলোও কেড়ে নেওয়া উচিত।”
লেমানে রুশ বাহিনী হেরে যেতে পারে এমন আশঙ্কা তিনি দুই সপ্তাহ আগেই রাশিয়ার জেনারেল স্টাফদের প্রধান ভালেরি জেরাসিমভের কাছে প্রকাশ করেছিলেন বলেও দাবি করেন কাদিরভ। কিন্তু জেরাসিমভ সে সময় তার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ইউক্রেইন যুদ্ধে পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুঁশিয়ারি কয়েকবারই উচ্চারণ করেছেন। বিরোধী পক্ষকে তিনি তার ওই হুঁশিয়ারিকে ‘ধাপ্পা’ বলে বিবেচনা না করতেও বলেছেন।