ইউক্রেইনে যুদ্ধক্ষেত্রে কয়েক মাসের বিপর্যয়ের পর শীর্ষ জেনারেলকে অভিযানের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া।
বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্জেই শোইগু চিফ অফ দ্য জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে ইউক্রেইনে চলমান ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ নিয়োজিত বাহিনীর সার্বিক কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
এই নিয়োগের মাধ্যমে ইউক্রেইন অভিযানের সব দায়দায়িত্ব এখন থেকে জেনারেল গেরাসিমভের ওপর বর্তাল। আর এর মাধ্যমে এতদিন ইউক্রেইন অভিযানের দায়িত্বে থাকা জেনারেল সের্জেই সুরোভিকিনের অবনমন ঘটল; যাকে তার নির্মমতার জন্য রুশ গণমাধ্যম ‘জেনারেল আর্মাগেডন’ নাম দিয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সামরিক বাহিনীর কমান্ড কাঠামোর ‘মান ও কার্যকারিতা’ এবং বিভিন্ন শাখার মধ্যে যোগাযোগের উন্নতি ঘটাতে দায়িত্বের এই রদবদল করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার বেসরকারি সামরিক প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন পূর্ব ইউক্রেইনের খনি শহর সোলেদারে পুরোটা তার বাহিনী দখল করে নিয়েছে এবং তীব্র লড়াইয়ে প্রায় ৫০০ ইউক্রেইনীয় সেনা হত্যা করেছে এমন দাবি করার মধ্যেই রাশিয়া ওই নির্দেশ দেয়।
এই লবন খনির শহরটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে রাশিয়া কাঠখড় পোড়াচ্ছে। এই শহরটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তা অগাস্টের পর রাশিয়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। কারণ ওই সময়ের পর থেকে পূর্বে ও দক্ষিণে ইউক্রেইনের পাল্টা আক্রমণে ধারাবাহিকভাবে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল রুশ বাহিনীগুলো।
১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ওয়াগনার গ্রুপসহ রাশিয়ার আধা-স্বায়ত্তশাসিত বেশ কয়েকটি বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে উচ্চ পারদর্শিতা দেখিয়েছে। এতে ইউক্রেইনের অভিযানে রাশিয়ার মূল সামরিক বাহিনীর অদক্ষতা দৃশ্যমান হয়েছে; যে অভিযান কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ করার প্রত্যাশা ছিল মস্কোর।
মঙ্গলবার রাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোজিন দাবি করেছিলেন, ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা সোলেদারের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তবে যুদ্ধ চলছে।
বুধবার তাদের এ দাবি নিয়ে উপহাস করেছিলেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
কিন্তু তার কয়েক মিনিট পরই এক বিবৃতিতে প্রিগোজিন বলেন, “ইউক্রেইনীয় সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলো থেকে সোলেদারের সব অঞ্চল পুরোপুরি মুক্ত ও পরিষ্কার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করতে চাই আমি। যে ইউক্রেইনীয় ইউনিটগুলো আত্মসমর্পণ করতে চায়নি তাদের ধ্বংস করা হয়েছে। পুরো শহরজুড়ে ইউক্রেইনীয় সেনাদের মৃতদেহ ছড়িয়ে আছে।”
ওয়াগনার গ্রুপের সর্বশেষ এ দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেইন কোনো মন্তব্য করেনি।