আয়োজিত হল জাতীয় আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় নবায়নযোগ্য শক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতা


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: November 06, 2022 14:00:10 | Updated: November 07, 2022 12:01:53


আয়োজিত হল জাতীয় আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় নবায়নযোগ্য শক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতা

বৈশ্বিক পরিবেশ ভারসাম্য সুরক্ষায় এবং বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ, ব্যয় সাশ্রয়ী ও টেকসই শিল্প-জ্বালানীর জন্য নবায়নযোগ্য ও বিকল্প জ্বালানী ব্যবহারে পরিকল্পনা, নীতিমালা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে বৃহত্তর সচেতনতা তৈরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এর জন্য প্রয়োজন গঠনমূলক ও গবেষণাধর্মী বিশ্লেষণ। এসকল বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে ডিবেট ফর হিউম্যানিটি (ডিএফএইচ) উদ্যোগ ও সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাব-এর সহ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় দুদিনব্যাপী (নভেম্বর ৪-৫) জাতীয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নবায়নযোগ্য শক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতা। বনানীর সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় দেশের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিক দল অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল অক্সফ্যাম। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তির।

আয়োজনের প্রথমদিন (৪ নভেম্বর) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, “জাতীয় স্বার্থে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে শিল্পপতিদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সীমিত সম্পদ সংরক্ষণে রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর কেবল নির্ভর না করে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।”

আয়োজনের শেষদিন (৫ নভেম্বর) সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একডেমীর সাবেক মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তি প্রদান হচ্ছে বিতর্ক।এতকালের শিল্পায়ন গণমুখী হয়েছে কিনা তা প্রশ্নের দাবীদার। গণমুখী শিল্পায়ন হলে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। জ্বালানী সাশ্রয় অবশ্যই জনগণের স্বার্থে হতে হবে। কারণ সার্বভৌম রাষ্ট্রে জনগণের স্বার্থের প্রাধান্য সর্বপ্রথম।”

সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিএফএইচ এর উপদেষ্টা ও আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র সাবেক নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা। হাফিজার মতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারকে বর্তমান সময়ে সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজনের অনুধাবন শুরুটা হতে পারে প্রজন্মের বিতার্কিকদের মাধ্যমেই।

অক্সফ্যাম প্রতিনিধি মোঃ রাজু আহমেদ মাসুম বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানী কেন্দ্রীক আলোচনা একটি বৈশ্বিক আলোচনার বিষয়বস্তু। অক্সফ্যাম বিশ্বাস করে বর্তমান প্রজন্মের মাঝে এই আলোচনা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিতর্ক একটি শক্তিশালী মাধ্যম।”

সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটি এর ডিন অধ্যাপক ডঃ সায়েদ সালাম বলেন, “উন্নত বিশ্বে উন্নয়ন ও জীবনধারায় পরিবেশের প্রাধান্য সর্বাগ্রে। বর্তমানে সোলার প্যানেল বা নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার আমাদের দেশেও প্রচলিত আছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যও কিছু অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে এ ব্যবহারের প্রসার ঘটছে না।”

ডিবেট ফর হিউম্যানিটি (ডিএফএইচ)-এর চেয়ারপার্সন মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধির নামে আমাদের সম্ভাবনাগুলো বিনষ্ট করে প্রজন্মের জন্য একগুচ্ছ সমস্যা তৈরি করে যাচ্ছি। আমাদেরকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে যেদেশে জন্ম নিয়েছি মৃত্যুর আগে তার চেয়ে একটি উন্নততর দেশ আমাদের আগামীর প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যাবো।”

এছাড়াও উক্ত আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শওকত আর হুসাইন, সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাব এর মডারেটর ও অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রুবা রুমানা, সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাষ্টিজ তারেক আল জলিল, সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ফারহান, ডিবেট ফর হিউম্যানিটি (ডিএফএইচ) এর সভাপতি তারেক আজিজসহ আরও অনেকে।

“জাতীয় আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় নবায়নযোগ্য শক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২২”-এ অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটি, মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সটাইলস, সরকারি তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ প্রমুখ।

দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের বিতর্কে “এই সংসদ ২০৩০ সাল থেকে গ্রীন ফ্যাক্টরি ব্যতীত কোনো ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুমতি প্রদান করবে না” প্রস্তাবের উপর সংসদীয় ধারার বিতর্কে ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বিজয়ী হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

Share if you like