জমি নিয়ে বিরোধে আশিয়ান গ্রুপের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ব্যবসায়ী কাজী এরতেজা হাসান।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকার গুলশান-২ নম্বর এলাকায় নিজের কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন পিবিআইর অতিরিক্ত সুপার (গণমাধ্যম) আবু ইউসুফ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক কাজী এরতেজা দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক।
আশিয়ানের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির জমি নিয়ে বিরোধ। ঢাকার ফার্মগেইটে যে ভবনে ভোরের পাতার কার্যালয়, সেখানেই আগে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ছিল।
আশিয়ানের মামলায় নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহকে এর আগে গ্রেপ্তার করেছিল পিবিআই। রিয়াজুল আলম নামে আরেকজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর গ্রেপ্তার করা হল কাজী এরতেজাকে। পিবিআই কর্মকর্তা ইউসুফ বলেন, “তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাজী এরতেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ঢাকার খিলক্ষেত থানায় মামলাটি করেন আশিয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ভাই সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া। তিনি আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্টসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)।
মামলায় নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরির জন্য আশিয়ান গ্রুপের কাছ থেকে পাঁচ বিঘা জমি কিনে চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দেওয়া এবং জালিয়াতি করে জমি নিবন্ধনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় অধ্যাপক আবু ইউসুফসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়। অধ্যাপক ইউসুফ বাদে এজাহারের অন্য দুই আসামি হলেন- রিয়াজুল আলম ও সেলিম মুন্সী।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আশিয়ান গ্রুপ ও নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির মধ্যে পাঁচ বিঘার একটি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। আশিয়ান গ্রুপ জমি বিক্রি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়টির কাছে আরও ২০ কোটি টাকা চায়। আর নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি চুক্তি জাল করে অতিরিক্ত টাকা দাবির অভিযোগ আনে। এ নিয়ে দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে দুটি মামলা করেছে।
আশিয়ানের মামলার পর গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি। সেই মামলায় জালিয়াতি করে চুক্তিপত্র বানিয়ে অতিরিক্ত ২০ কোটি টাকা দাবি করার অভিযোগ তোলা হয়।
ওই মামলায় গত ১৫ ডিসেম্বর আশিয়ান গ্রুপের এমডি নজরুল ইসলাম ভুঁইয়াসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করে ঢাকার হাকিম আদালত। তবে পরে তারা জামিন নেন।
আশিয়ানের মামলার এজাহারে দাবি করা হয়, ২০১৩ সালে কাজী শামীম মেহেদি নামে একজন মধ্যস্থকারীর মাধ্যমে আশিয়ান গ্রুপের কাছে জমি কেনার জন্য যান নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ। ওই বছর ৩ অগাস্ট আশিয়ান গ্রুপের সঙ্গে ৫০ কোটি টাকায় পাঁচ বিঘা জমি কেনার জন্য চুক্তি করে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি।
“এরপর তারা নগদ ও চেকের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করে। বাকি টাকা ওই বছর পরিশোধের কথা থাকলেও তারা পরিশোধ করেনি। পুরো টাকা পরিশোধ না করেই তারা জমিতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।”
মামলায় বলা হয়, এরপর ২০১৯ সালে আশিয়ান গ্রুপ পাওনা টাকা চাইতে গেলে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি জানায়, ২০১৩ সালেই নজরুল ইসয়াম ভুঁইয়া তাদের জমি নিবন্ধন করে দিয়েছেন।
আশিয়ানের অভিযোগ, স্বাক্ষর জাল করে সম্পূর্ণ বেআইনি প্রক্রিয়ায় ওই সময় জমির রেজিস্ট্রি নেয় নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি।