রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার সকাল সোয়া ৭টার দিকে নগরীর চন্দ্রিমা থানার চকপাড়া এলাকার এক ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রদের একজনের ভাই। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এরা হলেন চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শাকিব খান ও রেজোয়ান ইসলাম। শাকিবের বাড়ি নাটোর আর রেজোয়ানের বাড়ি যশোর।
এ ব্যাপারে পুলিশ পরিষ্কার করে কিছু না বললেও তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে আছেন বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক।
রেজোয়ানের বড়ভাই মেরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “গত শনিবার রাতে আমরা তিনজনই রাজশাহীতে এসেছি। পরের দিন সকালে আমরা ঘুমাচ্ছিলাম; এমন সময় বাইরে থেকে রেজোয়ান ও শাকিবকে ডাকা হয়। কিছুক্ষণ পর অন্য রুমে গিয়ে দেখি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে কয়েকজন লোক ওদেরকে জিজ্ঞেসাবাদ করছে। এক পর্যায়ে ওদেরকে হ্যান্ড কাফ পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।”
মেরাজুল বলেন, রেজোয়ান ও শাকিবের অপরাধ কী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় জানতে চাইলেও নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি তারা।
তিনি বলেন, “আগেই আমাদের সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নেন তারা। চলে যাওয়ার সময় কেবল আমার মোবাইল ফোনটা দিয়ে যান। যে গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানে আরও দুইজন আগে থেকেই ছিলে।”
মেরাজুলের অভিযোগ, “বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় জানালে নির্ধারিত সময় পার না হওয়ায় তাৎক্ষণিক জিডি নেওয়া হয়নি; পরে যেতে বলা হয়। ২৪ ঘণ্টা পর সেখানে গেলে পুলিশ জিডি না নিয়ে নগরের মতিহার থানায় যেতে পরামর্শ দেয়। মতিহার থানায় গেলে ঘটনাটি চন্দ্রিমা থানায় হওয়ায় সেখানে গিয়ে জিডি করার পরামর্শ দেয়।
“সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে সেখান থেকে দুজনেই নিরাপদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে আছেন বলে আশ্বস্ত করা হয়।”
এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ওসি এমরান আলীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেলে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. রফিকুল আলমকে এ ব্যাপারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুস সোবহান বলেন, “কে বা কারা তাদের নিয়ে গেছে এ ব্যাপারে আমরা এখনও নিশ্চিত কিছু জানতে পারিনি। তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। রেজোয়ানের ভাই ও সহপাঠীরা এসেছিল। আমরা তাদের জিডি করতে পরামর্শ দিয়েছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক জানান, পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে আছেন এবং তাদের বিভিন্ন ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ে অভিযানে আছে বললেও কী বিষয়ে অভিযান এবং কোন শাখার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা জানাননি তিনি।