Loading...

এইচএসসি: ডেঙ্গু আক্রান্তদের পরীক্ষা আলাদা ব্যবস্থায়

| Updated: November 05, 2022 20:16:58


এইচএসসি: ডেঙ্গু আক্রান্তদের পরীক্ষা আলাদা ব্যবস্থায়

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে শুরু হতে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। 

আর পরীক্ষা চলাকালে লোডশেডিং যেন না হয়, সেজন্য বিদ্যুৎ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

কোভিড মহামারী ও বন্যার কারণে কয়েক দফা পিছিয়ে সাত মাস পর রোববার শুরু হচ্ছে এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষায় ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। 

এমন সময়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। 

চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৪১ হাজার ৪৮১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের ১৬২ জন মারা গেছেন। 

এর মধ্যে গত অক্টোবরে রেকর্ড ২১ হাজার ৯৩২ জন রোগী ভর্তি ও ৮৬ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নভেম্বরের প্রথম চারদিনে ৩ হাজার ৪৫৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মারা গেছেন ২১ জন। 

এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও ডেঙ্গু আক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। 

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কেন্দ্র সচিবদের ডেঙ্গু ও কোভিডের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। 

“কেন্দ্র ও কেন্দ্রের আশেপাশে মশার ওষুধ ছিটাতে বলা হয়েছে। আর ডেঙ্গু রোগী যদি থাকে, তাকে আলাদা করে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি,” বলেন ঢাকা বোর্ডের এই চেয়ারম্যান তপন। 

এতদিন ধরে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলেও এ বছর ঢাকার বাইরেও ব্যাপকভাবে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় ৫০টি জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। 

জানতে চাইলে দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক তোফাজ্জুর রহমান জানিয়েছেন, এখনও কোন পরীক্ষার্থীদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পায়নি বোর্ড। 

“কেউ যদি অসুস্থ থাকে, কেন্দ্র সচিবের কাছে সেই শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবককে আবেদন করতে হবে। আবেদন করলে ওই পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা রুমে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এমনকি তার বিছানা-মশারি লাগলে, সেটিও সে নিয়ে আসতে পারবে। এগুলোর ব্যবস্থা আছে আমাদের।” 

লোডশেডিং বন্ধে চিঠি 

পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও জ্বালানি সংকটে দিনের বিভিন্ন সময়ে দেশজুড়ে লোডশেডিং হচ্ছে। শহরের তুলনায় গ্রামে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা বেশি ঘটছে। 

দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক তোফাজ্জুর রহমান মনে করেন, দিনে পরীক্ষা হওয়ায় বিদ্যুতের তেমন সমস্যা হবে না। 

তবে পরীক্ষা নির্বিঘ্নে নিতে লোডশেডিং বন্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। 

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, পরীক্ষা চলাকালীন লোডশেডিং যেন না হয়, সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

“জেনারেটর কেনার মতো সামর্থ্য অনেক কেন্দ্রের নাই। এখন আমি হঠাৎ করে বললেও হবে না। তাই আমরা বিদ্যুৎ বিভাগকেই বলেছি, পরীক্ষার সময়টায় লোডশেডিং যেন না হয়।” 

<div class="paragraphs"><p>মহামারীর মধ্যে এবারও এইচএসসি পরীক্ষা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে</p></div> 

মহামারীর মধ্যে এবারও এইচএসসি পরীক্ষা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে |ফাইল ছবি 

এক নজরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা 

কোভিড মহামারীর কারণে গত বছরের মতো এবারও বিষয়, নম্বর ও সময় কমিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। 

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে দুই ঘণ্টার পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য থাকবে ২০ মিনিট; সৃজনশীল বা রচনামূলকের জন্য সময় থাকবে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। 

এবার পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি ও গ্রুপভিত্তিক নৈর্বচনিক তিনটি বিষয় এবং একটি ঐচ্ছিক বিষয়ে পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচিতে। 

পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস অনুযায়ী, বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র- এই বিষয়গুলোতে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক আছে, সেগুলোতে ৪৫ নম্বরের (রচনামূলক ৩০ ও নৈর্ব্যক্তিক ১৫ নম্বর) এবং ব্যবহারিক না থাকলে ৫৫ নম্বরের (রচনামূলক ৪০ ও নৈর্ব্যক্তিক ১৫) পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। 

এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। 

২ হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। 

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪ হাজার ৬৪৭টি প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৫২৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন। 

তাদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২ লাখ ৪০ হাজার ৫০৬ জন, মানবিক বিভাগে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩৬ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। 

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ২ হাজার ৬৭৮টি প্রতিষ্ঠানে ৪৪৮টি কেন্দ্রে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ১ হাজার ৮৫৬টি প্রতিষ্ঠানে ৬৭৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিবে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৩১ শিক্ষার্থী। 

দেশের বাইরের আটটি দেশের আটটি কেন্দ্রে ২২২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। 

এ বছর পরীক্ষা দিবে মোট ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ ছাত্র ও ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ ছাত্রী। 

এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ জন। গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন। 

এবারের এইচএসসি পরীক্ষা বেলা ১১টায় শুরু হবে। আর দুপুরের পরীক্ষা হবে বেলা ২টা থেকে। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। 

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে পারবে না। 

শারিরীক প্রতিবন্ধকতা আছে এমন শিক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় থাকবে।  

পরীক্ষার জন্য ৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে হবে। 

Share if you like

Filter By Topic