Loading...
The Financial Express

শীতের সঙ্গে উবে গেল ‘সবজির স্বস্তি’

| Updated: February 25, 2023 18:02:35


এফই ফাইল ছবি এফই ফাইল ছবি

এই বসন্তে শীতের বাতাসের দোলা নেই বাজারে; সবজির বাজারে নেই আরও।

ইউক্রেন যুদ্ধের এই বাজারে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে শীত মৌসুম অন্তত একদিক দিয়ে ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল, সেটি সবজিতে। অন্যান্য পণ্যের মত ‘লাফায়নি’ এ পণ্যের দাম। ফলে গত কয়েক মাস ধরে বাজারদরের সংবাদে সবজির কথা এসেছে কমই।

শীত উধাও, তাই ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে সবজির বাজারের সেই ‘স্বস্তি’। জনপ্রিয় কিছু সবজির দেখাই মিললো না, সরবরাহ কমে আসার কারণে দাম বেড়ে যাচ্ছে অন্যগুলোর। আর গরমের সবজি আসছে কিছু কিছু, কিন্তু দাম অনেক বেশি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

লেবুর কথা না বললেই নয়। টানা কয়েক মাস এক ডজন মিলত যত টাকায়, সেই অর্থে এখন মেলে না এক হালিও।

শীত মৌসুম শেষ হয়ে আসায় দাম বাড়তি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

ঢাকার কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরেও শীতের সবজি বাঁধাকপির দেখা মেলেনি। ফুলকপি থাকলেও শীতের সেই সতেজ ভাব নেই, তবে দাম ঠিকই বাড়তি।

শীতে ২০ থেকে ২০ টাকায় মিলত যেটি, এখন দর ৩০ টাকা থেকে ৪০, কেউ কেউ দাম চাইছে তার চেয়েও বেশি।

সপ্তাহ দুয়েক আগেও ৩০ থেকে ৫০ টাকায় যে বেগুন মিলত, সেটি এখন চড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দামদরের সুযোগ নেই। মেটাতে হয় বিক্রেতাদের চাওয়া। সব দোকানে একই দাম।

একইভাবে ২০ থেকে ৩০ টাকা থেকে লাফিয়ে টমেটো পৌঁছে গেছে ৪০ বা তার চেয়ে বেশি দামে, ছোট আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায়।

কাঁচামরিচ গত কদিন ধরেই রান্নার ‘দামি উপকরণ’। এক কেজি কিনতে ছুটির দিন লেগেছে ১৬০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি।

গ্রীষ্মের আগাম সবজির স্বাদ নিতে চাইলে পকেকটা বেশ ভারী থাকা চাই। করলার দাম বিক্রেতারা চাইছেন কেজিতে ১২০ বা তার চেয়ে বেশি। বরবটির দামও একই রকম।

বছর জুড়ে মোটামুটি স্বস্তায় বিক্রি হওয়া মিষ্টি কুমড়ার কেজি চড়েছে ৪০ টাকায়। ঝিঙার দাম ৫০ থেকে ৬০।

লেবু: ‘ডজনের দামেহালিও মেলে না

শীতের আগে থেকে টানা কয়েক মাস কারওয়ানবাজার গেলে ২০ টাকা ডজন দরে লেবু বিক্রির হাকডাক শোনা গেছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে হঠাৎ পাল্টে গেছে সব কিছু।

এলাকার বাজারে ছোট আকারের লেবুর হালিই এখন ৪০ টাকা। একটু বড় আকার হলেই দাম উঠে যায় ৭০ টাকায়।

লেবু বিক্রেতা আনছার মিয়ার দাবি, শীতে চাহিদা কম থাকে লেবুর। এখন গরম পড়ছে, মানুষ শরবত খাবে বেশি। তাই বেড়েছে চাহিদা। তবে ফলন বাড়েনি। তাই দাম বাড়ছে।

“এহন লেবুতে যত ফুল আয়ে, তার বেশিরভাগই ঝইরা যায়। বাজারে আমদানি কম, যেগুলা আছে, অত ভালাও নয়। তাই দাম বাড়তি”, এ কথা বলে এই বিক্রেতা জানালেন, বৃষ্টি এলে ফলন বাড়বে। তখন কমে আসবে দাম।

কমতে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগির দাম

টানা দুই সপ্তাহ বেড়ে কেজিপ্রতি ২৩০ টাকায় উঠে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে এসেছে। ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কেজিপ্রতি কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির হিসাবে, একমাস আগেও ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এক বছর আগে বিক্রি হয়েছিল ১৫০ টাকায়।

ব্রয়লারের পাশাপাশি কিছুটা কমেছে লেয়ার ও সোনালি মুরগির দামও। ২৮০ টাকা থেকে লেয়ার নেমেছে আড়াই শতে, ৩২০ থেকে সোনালী নেমেছে তিনশ টাকায়।

মিরপুর পীরেরবাগের মুরগি বিক্রেতা শফিক মিয়া জানান, গত সপ্তাহে সরবরাহ কম ছিল, দামও বেশি ছিল। বেচাকেনাও বেশ কমে গিয়েছিল।

“গত দুই দিন ধইরা দেখতাছি দাম কিছুটা কাইম্যা আসছে। দাম কমলে আমরা আরও খুশি।”

গরুর মাংসের বাজারে অবশ্য কোনো ‘সুখবর’ নেই। কোনো দোকানে ৭০০, কোনো দোকানে ৭৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রাজধানীর বড়বাগ বাজারে মাংস কিনতে আসা হামিদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দাম বাড়লে আর কী করার আছে? খাইতে মন চাইলে তো দাম দিতে হবেই। না হয় না খেয়ে থাকতে হবে।

“কোনো একদিন হয়ত ঘুম থেকে উঠে দেখব গরুর মাংসের কেজি এক হাজার টাকা হয়ে গেছে। সেদিন আমি হয়ত কিনব না, কিন্তু কেউ না কেউ ঠিকই কিনে নেবে।”

Share if you like

Filter By Topic