Loading...
The Financial Express

ইউক্রেইনে যুদ্ধবিরতিসহ ১২ প্রস্তাব চীনের

| Updated: February 25, 2023 20:11:50


ইউক্রেইনে যুদ্ধবিরতিসহ ১২ প্রস্তাব চীনের

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ঠেকাতে আগ্রহী চীন বলেছে, আলোচনা ও মধ্যস্থতাই এই সংকট সমাধানের দৃশ্যত একমাত্র উপায়।

ইউক্রেইনে রাশিয়ার অভিযানের বর্ষপূর্তিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ১২ দফা প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি ও উত্তেজনা ক্রমশ হ্রাস করার কথা বিস্তৃতভাবে বলা হয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

চীনা মন্ত্রণালয়ের এই প্রস্তাব মূলত রাশিয়া গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাদের ভাষায় শুরু করা ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’পর বেইজিং যেভাবে কথা বলেছে, তারই ধারাবাহিকতা।

চীন এখন পর্যন্ত তার মিত্র রাশিয়াকে ইউক্রেইনে আক্রমণের জন্য নিন্দা জানায়নি, কিংবা প্রতিবেশী দেশে মস্কোর আক্রমণকে ‌‘আগ্রাসন’অ্যাখ্যাও দেয়নি। তারা এমনকী রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞারও কড়া সমালোচনা করে আসছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

“সংঘাত ও যুদ্ধে কারও লাভ নাই। সব পক্ষেরই যুক্তিসঙ্গত ও সংযত আচরণ করা উচিত, উচিত উত্তেজনা বৃদ্ধি ও আগুনে ঘি ঢালা বন্ধ করা এবং এই সংকট যেন আরও বাজে অবস্থায় না যায় কিংবা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সেদিকে নজর দেওয়া,” বলা হয়েছে চীনা মন্ত্রণালয়ের ওই নথিতে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে ফেরা সবচেয়ে বড় এই যুদ্ধ শুক্রবার দ্বিতীয় বছরে গড়াল। এ যুদ্ধের পর থেকে জাতিসংঘে রাশিয়া ক্রমাগত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে, এখন শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর নেতারা ইউক্রেইনে আরও সহায়তা পাঠানোর কৌশল নিয়ে আলোচনারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়েরও ইউক্রেইন যুদ্ধের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শান্তির প্রস্তাব নিয়ে ভাষণ দেওয়ার কথা। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের ভাষণ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। 

নিজেদের ভূখণ্ডে রুশ সেনারা থাকা অবস্থায়, কোনো শান্তিচুক্তিতে বসতে রাজি নয় ইউক্রেইন। যে কোনো বিরতিই রাশিয়াকে নতুন করে গুছিয়ে ওঠার সুযোগ করে দেবে বলে আশঙ্কা তাদের।

চীনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত জর্জ টলেডো বলেছেন, চীনের নথিটি মোটেও শান্তি প্রস্তাবের নয়। 

ইইউ নথিটি ভালোভাবে পড়ছে, তবে সেখানে যে আগ্রাসনকারীর নাম বলা হয়নি তা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন, বলেছেন তিনি।

বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য দেওয়া ব্রিফিংয়ে টলেডো বলেছেন, জাতিসংঘ সনদের মূল্যবোধের সুরক্ষা ও সেটি ঊর্ধ্বে তুল ধরা চীনের বিশেষ দায়িত্ব।

একই ব্রিফিংয়ে ইউক্রেইনের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স চীনের নথিটিকে ‘শুভ লক্ষণ’অ্যাখ্যা দিয়ে বলেছন, ইউক্রেইন বেইজিংয়ের কাছ থেকে আরও বেশি রাজনৈতিক সমর্থন চাইছে।

চীন রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মস্কোর সেনাদের ইউক্রেইন ছাড়ার আহ্বান জানাবে বলেও কিইভ আশা করছে, বলেছেন ইউক্রেইনের দূত ঝানা লেশচিনস্কি।

‘পারমাণবিক যুদ্ধ নয়’

চীন এই সংঘাতে তার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারবেন বলে মনে করেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে লেশচিনস্কি বলেন, তারা যদি নিরপেক্ষ হয়, তাহলে তারা রাশিয়া, ইউক্রেইন উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলত।

“এখন আমরা দেখছি, চীন মূলত রাশিয়ার সঙ্গেই কথা বলছে, ইউক্রেইনের সঙ্গে নয়,” বলেছেন তিনি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, শান্তি প্রস্তাব নিয়ে বেইজিংয়ের দেওয়া নথি নিয়ে কিছু কূটনৈতিকের সমালোচনার কোনো ভিত্তিই নেই। আর সেসব সমালোচনার লক্ষ্য হচ্ছে চীনের গায়ে কালি লাগানো।

গত বছর যুদ্ধক্ষেত্রে অপমানজনক পিছু হটার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেইনে আরও বল প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি বেড়েছে।

কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র অবশ্যই এড়াতে হবে, বলছে চীন।

“পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না, পারমাণবিক যুদ্ধ হতে পারে না। আমরা উত্তেজনা বৃদ্ধি, যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো দেশেরই জৈব বা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধী,” বলেছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Share if you like

Filter By Topic