অগ্নি নিরাপত্তা সনদ নেই রাজধানী ঢাকার এমন ভবন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর খোঁজে অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী সপ্তাহ থেকে এ অভিযান চালানো হবে বলে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন।
সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এরই মধ্যে রাজউক এবং সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত করে আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
গুলশানে একটি বহুতল ভবনে গত রোববার সন্ধ্যা ৭টায় আগুন লাগার পর তা নেভাতে চার ঘণ্টার বেশি সময় লাগে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। ভয়াবহ ওই আগুন থেকে বাঁচতে সেদিন রাতে ভয়ে লাফিয়ে পড়ে সেখানে থাকা দুইজনের মৃত্যু হয়।
রাজধানীর অভিজাত এলাকার একটি ভবনে আগুন লাগার এ ঘটনার পর অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি আবার সামনে আসে।
এ ঘটনার পরদিন পরিদর্শনে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবনটি দেখতে সুদৃশ্য হলেও নিরাপত্তার দিক থেকে অনেক ঘাটতি খুঁজে পান।
ভবনটি ঘুরে দেখার পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী সোমবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভবনটি আপাতদৃষ্টিতে খুব অত্যাধুনিক হলেও এর নিরাপত্তার ‘ল্যাপস ছিল’।
“এই ভবনটি কিন্তু খুবই অত্যাধুনিক একটা ভবন। কিন্তু আমরা তদন্ত করে বুঝলাম, এখানে অনেক রকমের সমস্যা আছে।”
ভবনটির কোনো ‘ফায়ার সেইফটি প্ল্যান’ ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা যেসময় ভবনটি করা শুরু করেছেন, তখন ফায়ার সেইফটি লাইসেন্স বলে কিছু ছিল না। সেজন্য তারা একটি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আমাদের অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন আইন অনুযায়ী এখানে ফায়ার সেইফটি প্ল্যান নেওয়ার কথা ছিল। যেটা উনারা নেননি।”
আর সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী ভবন নির্মাণ বাধ্যতামূলক। যে সংস্থার কার্যপরিধির মধ্যে যেটুকু রয়েছে, সেই সংস্থাকে সেসব ভবন চিহ্নিত করতে হবে।
রানা প্লাজার ঘটনার পরে কিছু ভবনকে কোড দিয়ে শনাক্ত করা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সেটা করার জন্য সিটি করপোরেশন এবং রাজউকের সাথে কাজ করছি।"
তিনি বলেন, "ফায়ার সার্ভিসের যে অংশ আছে বিশেষ করে ফায়ার সেফটির আইনটি মানা হয়নি যেখানে, প্রথমেই আমরা সেখানে যাব।"
অভিযানে সিটি করপোরেশন সঙ্গে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্য যে সংস্থাগুলো আছে তারা তাদের বিষয়টি দেখবে।
সম্প্রতি ভয়াব্হ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কে উদ্ধার অভিযান শেষে ফিরে আসা ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি দলের কার্যক্রমের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। বাংলাদেশের সমন্বিত উদ্ধারকারী দলটি গত ৮ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে যায় এবং ২০ ফেব্রুয়ারি ফিরে আসে।