Loading...
The Financial Express

সীমান্তে মিয়ানমারের গোলা- 'প্রয়োজনে' জাতিসংঘে যাবে বাংলাদেশ

| Updated: September 18, 2022 13:19:35


সীমান্তে মিয়ানমারের গোলা- 'প্রয়োজনে' জাতিসংঘে যাবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে জিরো লাইনে গোলার আঘাতে একজন নিহত হবার ঘটনার "তীব্র প্রতিবাদ" করে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, শান্তিপূর্ণ ভাবে এ সমস্যার সমাধান চায়। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান না হলে প্রয়োজনে বিষয়টি জাতিসংঘে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

"আমরা যুদ্ধ চাই না। শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে। আমাদের প্রচেষ্টায় না হলে জাতিসংঘে তুলবো," তিনি শনিবার সকালে ধানমন্ডিতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন। খবর বিবিসি বাংলার।

শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নে তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেলে একজন নিহত হয় ও কয়েকজন আহত হয় । ঘুমধুম সীমান্তে জিরো লাইনে রোহিঙ্গাদের একটি ক্যাম্পে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

গোলাবারুদের আঘাতে একজন মারা গেছে ও কয়েকজন আহত হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে জানিয়ে তিনি আশা করেন মিয়ানমার সংযত হবে।

"এখন যে গোলাগুলি— তাদের অভ্যন্তরীণ কনফ্লিক্ট (সংঘাত) সেটা তাদের ভেতরেই যেন থাকে। আমাদের এদিকে যেন না আসে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও শক্তভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করবে," বলছিলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, তারা কোন যুদ্ধ চান না বরং চান এসব ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধান।

এর আগে গত ২৮শে অগাস্ট বান্দরবানের এই তুমব্রু সীমান্তেই মিয়ানমার থেকে দু'টি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়েছিল। এছাড়া গত তেসরা সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টারের গোলা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে এসে পড়ে।

এই ঘটনাগুলোর ব্যাপারে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়।

তা ছাড়া কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঢাকায় বিদেশী কূটনীতিকদের সাথেও বৈঠক করে ঘটনাগুলো সম্পর্ক অবহিত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৃহস্পতিবার তার সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন যে, "সমস্যা হয়েছে মিয়ানমার সরকারকে নিয়ে। যে যত চাপই দিক এরা কোন ব্যাপারই নেয় না। এরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাতে লিপ্ত। এখানেই বড় সমস্যা"।

তিন গোলায় হতাহত, মাইন বিষ্ফোরণেও একজন আহত

শুক্রবার রাতের ঘটনায় একটি গোলা বিস্ফোরণে একজন নিহত হবার খবর এলেও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বলছে প্রকৃতপক্ষে তিনটি গোলা বিস্ফোরিত হয়েছিলো।

"সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞরা এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে। সেখানে একটি নয়, বরং তিনটি গোলা বিস্ফোরিত হয়েছে," বিবিসি বাংলাকে বলেছেন বিজিবি পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান ।

এছাড়া ভূমি মাইন বিস্ফোরণে একজন বাংলাদেশি আহত হবার ঘটনাও ঘটেছে। তুমব্রু হেডম্যানপাড়া সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলার সংলগ্ন মিয়ানমার অভ্যন্তরে মাইনটি বিস্ফোরিত হয়।

মিস্টার রহমান জানিয়েছেন যে, এ ঘটনার জোর প্রতিবাদ করা হয়েছে দুই দেশের বাহিনী পর্যায়ে। এছাড়া কূটনৈতিক পর্যায়ে শক্ত প্রতিবাদের প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার রাত আটটার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ও কোণাপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওই ক্যাম্পটির ভেতরে এসে গোলা পড়েছিলো।

এ সময় তিনটি গোলা এসে সেখানে পড়লেও প্রথমে জানানো হয়েছিলো যে একটি গোলা বিস্ফোরিত হয়েছে আর দুটি বিস্ফোরিত হয়নি।

তবে পড়ে জানা যায় তিনটি গোলাই বিস্ফোরিত হয়েছে। আর এর মধ্যে দুটি বাংলাদেশের সীমানার ভেতরেই এসে পড়েছে।

এ ঘটনায় একটি পরীক্ষা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নিয়েছে ঘুমধুম থেকে।

ঘুমধুমের কী অবস্থা এখন

লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান জানিয়েছেন আজ শনিবার আর কোন গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।

"আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। সতর্ক আছি। এসব ঘটনার সুযোগে রোহিঙ্গা নাগরিকরা যেন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেটিও নিশ্চিত করা হচ্ছে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজও বিবিসি বাংলাকে বলেছেন রাতে টুকটাক শব্দ শোনা গেলেও আজ সকাল থেকে মিয়ানমারের দিকে আর কোন গোলাগুলির শব্দ তারা শুনতে পাননি।


Share if you like

Filter By Topic