মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা হত্যা, ইয়াবা ব্যবসার মত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তারা এখন বাংলাদেশের জন্য ‘বিষফোঁড়া’ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘সাংস্কৃতিক স্কোয়াড’ সম্মেলনে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেছেন, “তারা এখন প্রতিনিয়ত অপরাধজগতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হত্যাকাণ্ডের মত ঘটনা ঘটাচ্ছে। ক্যাম্পের ভেতরে ইয়াবার ব্যবসা করছে। গতকালও (বুধবার) গোলাগুলি হয়েছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড়া।”
সম্প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এপিবিএন সম্পর্কে হিউম্যান ওয়াচ যা বলছে, এটা তথ্যভিত্তিক নয়। তাদের আরও বেশি দেখে এসে রিপোর্ট করা উচিত।”
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কেন এপিবিএন মোতায়েন করা হয়েছে, সেটির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা প্রতিদিন মারামারি করছে। তারা গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। তারা বিভিন্ন গ্রুপ সাব গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অপরাধ সংঘটিত করছে। তারা কাঁটাতারের বেষ্টনী কেটে মিয়ানমারে গিয়ে ইয়াবা নিয়ে আসছে।
এসব কারণে সেখানে পুলিশের নিয়মিত ইউনিটের পাশাপাশি এপিবিএন দেওয়া হয়েছে।
‘উগ্র মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক তামসিকতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক' স্লোগানকে ধারণ করে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বলেন, পঁচাত্তরে আমরা একটি হোঁচট খেয়েছি। হোঁচট খেয়ে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের গায়ে চিমটি কেটে দেখতাম বেঁচে আছি, নাকি মরে গেছি। আমরা রাজাকার-আল বদরের গাড়িতে পতাকা দেখেছি, এটাও আমাদের সহ্য করতে হয়েছে। আমরা এটাও দেখেছি ইনডেমনিটি বিলের মাধ্যমে বিচার কাজ বন্ধ করে দেওয়া।
“সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এলেন এবং এদেশ ঘুরে দাঁড়াল। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারটা তিনি করলেন। বিচারের রায় একের পর এক কার্যকর হচ্ছে। বাকি যে কজন আছে, অবশ্যই তারা যেখানে আছে, যখনই তারা ফিরে আসবে, তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে ইনশাআল্লাহ।”
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, সংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বক্তব্য দেন।