Loading...

মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সমস্যা নিয়ে গ্রাহক ও টেলিকম কোম্পানিগুলো কী বলছে

| Updated: July 01, 2022 10:08:42


মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সমস্যা নিয়ে গ্রাহক ও টেলিকম কোম্পানিগুলো কী বলছে

বাংলাদেশের শীর্ষ টেলিকম অপারেটর গ্রামীণ ফোনের নতুন সিম (টেলিফোন সংযোগ) বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ ।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বা বিটিআরসি এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিটিআরসি জানিয়েছে, গ্রামীণ ফোনের সেবার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠায় অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে ।

বিটিআরসির পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশে বর্তমানে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। যার মধ্যে গ্রামীণ ফোনের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাড়ে আট কোটি।

অভিযোগের শেষ নেই

বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের সেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে বিস্তর অভিযোগ।

এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে - কল ড্রপ হওয়া, কথা কেটে যাওয়া, প্রায়শই ফোনে নেটওয়ার্ক ওঠানামা করা, ইন্টারনেটের গতি ধীর হওয়া, অনেক সময় ইন্টারনেট না থাকা - ইত্যাদি।

ঢাকার বাসিন্দা তামান্না সুরাইয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, "বিষয়টি বিরক্তিকর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।"

তিনি বলেন, মোবাইল ফোনে কথা বলতে গিয়ে তিনি এখন কল ড্রপের আতঙ্কে থাকেন। "কথা বলার সময় কল কেটে যায় প্রায়ই। ঠিক মতো শোনা যায় না," বলেন তামান্না সুরাইয়া।

একই কথা বলছেন ঢাকার আরেক বাসিন্দা দিলরুবা ইয়াসমিন জিনিয়া।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর সার্ভিসের মান এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে বলে মনে হচ্ছে।

"আমি ভীষণ বিরক্ত হই। তারা সার্ভিস ঠিকমতো দিচ্ছে না," বলেন মিস্ জিনিয়া।

গ্রাহকদের অভিযোগ হচ্ছে, কমবেশি সবগুলো মোবাইল ফোন কোম্পানির সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

মোবাইল কোম্পানিগুলো কী বলছে?

সিম বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা দেবার পর গ্রামীণ ফোনের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বিটিআরসির এই নিষেধাজ্ঞাকে তারা অপ্রত্যাশিত বলে বর্ণনা করেছে।

গ্রামীণ ফোন দাবি করছে, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মানদণ্ড থেকেও তারা এগিয়ে আছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, "ধারাবাহিকভাবে নেটওয়ার্ক ও সেবার মানোন্নয়নে আমরা বিটিআরসি'র সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।"

অন্যদিকে দেশের আরেকটি শীর্ষ টেলিকম অপারেটর রবি বলছে, নেটওয়ার্ক নিয়ে গ্রাহকদের যেসব অভিযোগ আছে সেগুলো নিরসনের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

রবির হেড অব কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স-এর প্রধান সাহেদ আলম বিবিসি বাংলাকে বলেন, টেলিফোন সেবার মানের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে।

তিনি বলেন, আইটিইউ'র মানদণ্ড অনুযায়ী কল-ড্রপ দুই শতাংশের বেশি হলে নেটওয়ার্ক সেবা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রবির ক্ষেত্রে সেটি দুই শতাংশের নিচে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মি. আলম বলেন, মোবাইল ফোন সংযোগের ভালো সেবা নিশ্চিত করতে হলে শুধু সংশ্লিষ্ট টেলিকম অপারেটরই দায়ী হয়। এর সাথে আরো অনেক জড়িত আছে।

তারা ঠিকমতো সেবা দিতে না পারে তাহলে সমস্যা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বর্তমানে মোবাইল ফোন অপারেটররা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন করতে পারছে না। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল হবার পেছনে এটিও অন্যতম কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মি. আলম বলেন, ঢাকা শহরে বর্তমানে তারা এক হাজারের বেশি নেটওয়ার্ক টাওয়ারে স্থাপন করতে পারছেন না নানাবিধ বিধিনিষেধ এবং স্থান সংকটের কারণে।

এছাড়া বিভিন্ন মার্কেট, শপিং মল এবং নানা স্থাপনার ভেতরে ভালো নেটওয়ার্কের জন্য 'ইন-বিল্ডিং সলিউশন' (আইবিএস) দরকার। কিন্তু নানা বিধি-নিষেধের কারণে সেটিও সম্ভব হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন মি. আলম। খবর বিবিসি বাংলার।

Share if you like

Filter By Topic