মিয়ানমার সীমান্তে যুদ্ধবিমানের ‘গোলাবর্ষণের’ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার দেশটির নাগরিকদের বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এ বিষয়ে সতর্ক সরকার।
এ বিষয়ে সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডকে (বিজিবি) সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে বলে শনিবার সিলেটে এক অনুষ্ঠান শেষে জানান তিনি।
চা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
এদিন সন্ধ্যায় সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সের পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে নির্যাতিতরা বাংলাদেশে চলে আসে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এবার তাদের কোনো নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে না।
দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী সংঘাতে জড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমাদের ভয়, সে দেশের নাগরিকরা যখন নির্যাতিত হন তখন বাংলাদেশের দিকে চলে আসেন।
“তবে আমরা জানতে পেরেছি, তারা এবার বাংলাদেশের দিকে আসছে না। এটি একটি ভালো খবর।’’
কিছু দিন আগে মর্টার শেল ‘নিক্ষেপের’ পর এবার মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার বান্দরবানে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে গোলাবর্ষণ করেছে বলে শনিবার জেলা পুলিশ জানিয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় শনিবার এসব যুদ্ধবিমান হানা দেয় বলে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান।
এতে বলা হয়, “শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রেজু আমতলীর বিজিবির বিওপির (সীমান্ত চৌকি) আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০ ও ৪১ নম্বর মাঝামাঝি এলাকায় ঢুকে পড়ে এসব যুদ্ধ বিমান।”
এর আগে ২৮ অগাস্ট দুপুরে ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ার পর দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা।
শনিবারের ঘটনার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তাদের সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করবে। এমন দুর্ঘটনা আগামীতে যেন না ঘটে, বিষয়টি তারা দেখবেন।”
এসময় তিনি মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমানায় পড়েনি বলেও জানান।
তিনি বলেন, “খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমান্তে যে মর্টার শেল দেখা গেছে তা বাংলাদেশের সীমানায় পড়েনি; জঙ্গলে পড়েছিল। তবে এসব ব্যাপারে বাংলাদেশ সতর্ক আছে।”
এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সিলেট ৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ, জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান ও এসপি আব্দুল্লাহ আল মামুন।