মঙ্গলের মাটি দিয়ে মঙ্গলেই হবে থ্রিডি-প্রিন্টিং


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: September 19, 2022 17:05:49 | Updated: September 19, 2022 23:01:06


ছবি: রয়টার্স

থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের কাঁচামাল হিসেব মঙ্গলের মাটির ব্যবহার উপযোগিতা নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা। অর্থাৎ, দূর ভবিষ্যতে মঙ্গলের মাটি দিয়ে মঙ্গলেই থ্রিডি-প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে অতিপ্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও উপকরণ নির্মাণের সুযোগ পাবেন নভোচারীরা।

সম্প্রতি মঙ্গলের মাটি আর পাথরের কৃত্রিম নমুনা নিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা চালিয়েছেন ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেকানিকাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক অমিত বন্দোপাধ্যায় ও তার দল। আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সে নমুনার থ্রিডি-প্রিন্টিংয়ের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার উপযোগিতার প্রমাণ পেয়েছেন তারা।

স্পেস ডটকমের প্রতিবেদন বলছে, ভবিষ্যতের মঙ্গল মিশনগুলোয় নভোচারীদের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াতে পারে পরীক্ষার ফলাফলগুলো। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে অমিত বলেছেন, “দূরের মহাকাশে মানব নভোচারীবাহী মিশনের কথা ভাবলে থ্রিডি-প্রিন্টিং হচ্ছে এমন কিছু যা হতেই হবে। কারণ, আমরা চাইলেই পৃথিবীতে থেকে প্রয়োজনীয় সবকিছু বহন করে নিতে পারবো না।”

“কিছু ভুলে গেলে ফেরত এসে সেটা নিয়ে যাওয়ার সুযোগও নেই।”

মঙ্গলে থ্রিডি-প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও উপকরণ নির্মাণ করা গেলে এতে কেবল পরিবহল জটিলতা কমবে না, রেড প্ল্যানেট খ্যাত গ্রহটিতে নির্মাণ খরচও কমে আসবে বলে জানিয়েছে স্পেসডটকম।

বন্ধ হয়ে যাওয়া স্পেস শাটল প্রকল্পের মহাকাশযানগুলোতে করে কার্গো বহন করে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ নিতেই নাসার খরচ হতো কেজি প্রতি ৫৪ হাজার ডলার করে।

পৃথিবী থেকে মঙ্গলের গড় দূরত্ব ১৪ কোটি মাইল। এক্ষেত্রে আইএসএসে কার্গো বহনের চেয়ে মঙ্গলের কার্গো পাঠানোর খরচ যে অনেক গুণ বেশি হবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।

থ্রিডি-প্রিন্টিং প্রযুক্তি কেন্দ্রীক পরীক্ষাগুলোর বেশিরভাগে মঙ্গলের মাটির কৃত্রিম নমুনার সঙ্গে টাইটেনিয়াম অ্যালয় মিশিয়ে নিয়েছিলেন গবেষকরা। কেবল কৃত্রিম নমুনা দিয়েও পরীক্ষা চালিয়েছেন তারা।

গবেষকরা প্রথমে মঙ্গলের মাটির কৃত্রিম নমুনা আর টাইটেনিয়াম অ্যালয়ের মিশ্রণকে দুই হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করেন, তারপর তরলে পরিণত হওয়া কাঁচামাল ব্যবহার করে থ্রিডি-প্রিন্টারে বিভিন্ন আকারের উপকরণ তৈরি করেন।

থ্রিডি প্রিন্টারে নির্মিত উপকরণগুলো কতোটা টেকসই, সে বিষয়টিও যাচাই করে দেখছেন গবেষকরা।

গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, মিশ্রণে অন্তত পাঁচ শতাংশ মঙ্গলের মাটি থাকলে নির্মিত উপকরণ বা যন্ত্রাংশ কেবল টাইটেনিয়াম অ্যালয় ব্যবহার করে তৈরি উপকরণের চেয়ে বেশি টেকশই হচ্ছে। কিন্তু, কেবল মঙ্গলের মাটির কৃত্রিম নমুনা ব্যবহার করে নির্মিত উপকরণগুলোর শীতল হয়ে আসার পর ভঙ্গুর হয়ে পড়ছিল বলে উঠে এসেছে স্পেস ডটকমের প্রতিবেদনে।

তারপরও ওই উপকরণ ‘রেডিয়েশন শিল্ড’-প্রলেপ দেওয়ার কাছে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।

Share if you like