অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনী।
‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ শিরোনামে প্রকাশিত ২৪৪ পৃষ্ঠার বইটির বিক্রয় মূল্য ৪০০ টাকা। বইমেলায় ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি হচ্ছে বইটি।
দুর্গম হাওরের নিভৃত এক পল্লী থেকে উঠে এসে রাজনীতিতে সদর্প বিচরণ ঘটিয়ে রাষ্ট্রের প্রধানের দায়িত্বে আসীন আবদুল হামিদের জীবনকথা বইয়ের মোড়কে এনেছে বাংলা একাডেমি। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা।
বুধবার বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী, যার মধ্যে একটি রাষ্ট্রপতির আত্মজৈবনিক গ্রন্থ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
অন্য বইগুলো হল- শেখ হাসিনা সম্পাদিত শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলী ১ম খণ্ড, মুহম্মদ নূরুল হুদা সম্পাদিত চারটি বই- অসমাপ্ত আত্মজীবনী : পাঠ-বিশ্লেষণ, কারাগারের রোজনামচা : পাঠ-বিশ্লেষণ, আমার দেখা নয়াচীন : পাঠ-বিশ্লেষণ, জেলা সাহিত্যমেলা এবং প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের সাবিত্রী উপাখ্যান উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ ‘দি ম্যাটার অব সাবিত্রী’।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারও প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মুখবন্ধে বইটি প্রকাশের অন্যতম অনুপ্রেরণাদানকারী প্রয়াত মাইনউদ্দিন খন্দকারকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। কৃতজ্ঞচিত্তে উল্লেখ করেন বঙ্গভবনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কথা।
বইটিতে ৩১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত উঠে এসেছে কিশোরগঞ্জে আবদুল হামিদের শৈশবের নানা কথা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন মিঠামইন-ভাটির জীবন বিষয়ে। তৃতীয় অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ সংস্কৃতি। চতুর্থ অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে আমার পিতা।
পঞ্চম অধ্যায়ে আছে স্কুল পর্ব। এতে ৭৩-১০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ভৈরব কেবি হাই স্কুল, দুরন্তপনা, ভৈরব, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী ভ্রমণ, মিষ্টি খাওয়ার প্রতিযোগিতা, হাজতবাস, বিদায় ভৈরব, নিকলী জিসি হাই স্কুল, নিকলীর সেই দুরন্ত দিনগুলি, একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন, যতসব মজার ঘটনা, ভাটি এলাকার মহৎ ব্যক্তিবর্গ শিরোনামে বিষয়গুলো সাজিয়েছেন আবদুল হামিদ।
ষষ্ঠ অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে কলেজ জীবন। গুরুদয়াল কলেজ, কিশোরগঞ্জ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির সভা ভণ্ডুল, ছাত্র প্রতিনিধি পরিষদ গঠন, ছাত্ররাজনীতিতে দীক্ষা, রোমান্টিক মুগ্ধতা, প্রেম ও বিয়ে বিষয়ে লেখা রয়েছে এতে।
সপ্তম অধ্যায়ের নাম রাজনীতি ও আন্দোলন। এ বিষয়ে ১২১-১৩০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত লেখা রয়েছে। এতে কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম দেখা, ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচন শীর্ষক লেখা উল্লেখ করেছেন।
অষ্টম অধ্যায়ে ঐতিহাসিক ছয় দফা ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ে ১৩১-১৪২ পৃষ্ঠাজুড়ে তিনি উল্লেখ করেছেন। এই অধ্যায়ের শিরোনামগুলো হল- ছয় দফা, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আবার দেখা, রাজনীতি আর আন্দোলন।
নবম অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে উনসত্তরের গণআন্দোলন ও নির্বাচন প্রক্রিয়া। এতে ১৪৩-১৫৮ পৃষ্ঠা পর্যন্ত লেখাজুড়ে উনসত্তরের গণআন্দোলন, ঢাবিতে ভর্তি ক্যানসেল, কিশোরগঞ্জে রাজনীতি ও সংগঠন করতে হবে, এমএনএ প্রার্থী নির্ধারণ, নির্বাচন পরিক্রমা, নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি বিষয়ে লেখা রয়েছে। দশম অধ্যায়ের নাম স্বাধীনতা সংগ্রাম। ১৫৯-১৭০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি বিষয়ে লেখা রয়েছে।
একাদশ অধ্যায়ের নাম ভারতে ক্যাম্পের দিনগুলো। ১৭১-২০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ভারত গমন, বালাট ও শিলং পর্ব, শরণার্থী রিসেপশন ও রিক্রুটমেন্ট ক্যাম্প পরিচালনা, ধুবাজুরা গণহত্যা, ক্যাম্পের কাছে খাসিয়া সম্প্রদায়, ভারতীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা, ক্যাম্প পরিদর্শন শিরোনামের লেখা রয়েছে।
দ্বাদশ অধ্যায়ের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের হাতছানি। এতে শিরোনাম করেছেন- গ্রামবাংলা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে, ঈদের আনন্দ, বাবার মৃত্যু, বাংলাদেশকে ভুটান ও ভারতের স্বীকৃতি শিরোনামের লেখা আছে।
ত্রয়োদশ অধ্যায়ের নাম বিজয়। ২৩৯-২৪৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত বিজয়ের গৌরবগাথা উল্লেখ করেছেন তিনি। বিজয়ের কেতন ওড়ে, বিজয়ের আনন্দে ঘরে ফেরা।