জাতীয় নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে উগ্রবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
সোমবার পুলিশের বিশেষায়িত অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, নির্বাচন যখন আসে তখন রাজনৈতিক কর্মসূচি, সংঘাত, জ্বালাও-পোড়াও নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের সবগুলো ইউনিট ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সুযোগে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে জঙ্গিরা হুট করে এমন কিছু করে পুলিশকে যাতে ‘বিস্মিত’ করতে না পারে সেজন্য জঙ্গি দমনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিটি ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের কোনো অভ্যন্তরীণ কারণে জঙ্গিবাদের উদ্ভব হয়নি। সবসময়ই আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহে প্রভাবিত হয়ে এদেশে উগ্রবাদীরা বিভিন্ন সময় মাথাচাড়া দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আমি বলব না বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদকে আমরা একেবারে উপড়ে ফেলতে পেরেছি। তবে এটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”
তিনি বলেন, এটিইউ, র্যাব, ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সবাই মিলে আমরা জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করেছি। যারা র্যাডিকালাইজড হয়েছে তাদের এখন কাউন্সিলিংয়ের কাজও চলছে।
“আমরা মনে করি এটি একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমরা সেই জায়গায় কাজ করছি। আমরা সেটা পেরেছি বলে বিশ্বে আমরা মডেল হয়েছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে বলেছেন, আমরা জঙ্গি দমনে অভুতপূর্ব কাজ করেছি। আমরা এখানে কখনও জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেব না। বিদেশি কোনো সন্ত্রাসীকেও আশ্রয় দেব না।”
পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ হোলি আর্টিজান হামলা পরবর্তী সেই দিনগুলোর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “তখন কী একটা সময় গেছে। বিদেশি দূতাবাসগুলো সপ্তাহে সপ্তাহে ট্রাভেল অ্যাডভাইজরি ইস্যু করে। কোনো কোনো দূতাবাস তাদের কর্মীদের পরিবার সরিয়ে নিতে বলে। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিদেশে কার্গো পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়।
“এই পরিস্থিতি থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর চেষ্টায় বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু (জঙ্গিবাদের) থ্রেট এখনও শেষ হয়ে যায়নি। বৈশ্বিকভাবে এই সন্ত্রাসবাদ যতদিন থাকবে, ততদিন এখান থেকেও যাবে না। আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই।”
অনুষ্ঠানে এটিইউর প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিন নতুন এ সংস্থার প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও সহায়তা দরকার বলে জানান।