ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ‘অধ্যাপক সিতারা পারভীন পুরস্কার’ পেয়েছেন ১১ শিক্ষার্থী।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
২০২০ সালের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম ১০ স্থান অর্জন করায় তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তারা হলেন- ইশরাক সাব্বির নির্ঝর, আরউইন আহমেদ মিতু, ইশরাত জাহান প্রমি, জোবায়ের আহমেদ, কৌশিক এইচ হায়দার, মীর সাদ্দাম হোসেন, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, আবু নুমায়ের সাদ, তাসনুভা আরেফিন, জান্নাতুল নাঈম পিয়াল ও তামারা ইয়াসমিন তমা।
এ সময় উপাচার্য একাডেমিক সফলতা অর্জনের পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধ্যের জাগরণ ঘটানো জরুরি বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “সফলতা অর্জন করা যায়, কিন্তু সফলতার সঙ্গে যদি মানবিক মূল্যবোধ্যের সমন্বয় ঘটানো যায়, তাহলে সেটি প্রকৃত সফলতা।”
বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক সিতারা পারভীন ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমদের মেয়ে সিতারা পারভীনের স্বামী আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলীও এ বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
২০০৬ সাল থেকে পরিবারের উদ্যোগে বিভাগের এই মর্যাদাকর পুরস্কার শুরু হয়। চার বছরের স্নাতক পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১০ স্কোরের অধিকারীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। কখনও একাধিক শিক্ষার্থী একই স্কোর পেলে এর সংখ্যা দশের বেশি হয়।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, “একাডেমিক সফলতার জন্য আজকে ১১ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হল। এই একাডেমিক সাফল্যের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু মানবিক মূল্যবোধ জাগরণ খুব জরুরি।”
অধ্যাপক সিতারা পারভীন মূল্যবোধের পরিচায়ক ছিলেন জানিয়ে উপচার্য বলেন, “তিনি অত্যন্ত মানবিক মূল্যবোধের একজন মানুষ ছিলেন। যেমনিভাবে তিনি সদালাপী, তেমনিভাবে বন্ধুবৎসল ও মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।
“পারিবারিক ঐতিহ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিভাগে পেশাগত দায়িত্ব পালনে একনিষ্ঠতা এবং পঠন-পাঠনে বিষয়বস্তুর গভীরে প্রবেশে একটি অনুসন্ধিচ্ছু দৃষ্টিভঙ্গি ছিল তার । কীভাবে একজন প্রকৃষ্ট ভালো মানুষ হিসেবে সমাজে বসবাস করা যায়, সেজন্য তিনি জীবনভর চেষ্টা করেছেন। তার পিতা সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের মধ্যেও সেই গুণ ছিল।”
তার নামে পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে তাকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যদি তার মূল্যবোধ ধারণ করেন তবেই তাকে সর্বোৎকৃষ্ট পন্থায় শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে জানান উপাচার্য।
এতে সভাপতির বক্তব্যে বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, “অধ্যাপক সিতারা পারভীন ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগর। আমি তাকে ক্লাসরুমে পেয়েছি, তিনি চমৎকারভাবে পড়াতেন।
“পাঠদানের দক্ষতার পাশাপাশি তিনি মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তিনি স্টুডেন্টফ্রেন্ডলি (শিক্ষার্থীবান্ধব) ছিলেন। উনার স্মৃতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা সব সময় অব্যাহত থাকবে।”
অনুষ্ঠানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান, অধ্যাপক সিতারা পারভীনের স্বামী অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী বক্তব্য দেন।
বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সিতারা পারভীনের জীবনী পাঠ করেন সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার।