জি এম কাদেরকে বিরোধী দলীয় নেতা করার তোড়জোড়


FE Team | Published: September 01, 2022 20:45:49 | Updated: September 02, 2022 17:37:11


জি এম কাদেরকে বিরোধী দলীয় নেতা করার তোড়জোড়

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার পদে বসাতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি পাঠিয়েছে পার্টির সংসদীয় দল।

বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ডাকার একদিনের মধ্যেই পার্টির সংসদীয় দল বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেয়। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিরোধী দলীয় নেতা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে সংসদেও ঠিকমত আসতে পারছেন না। এজন্য সংসদীয় দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

“পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক করেছি আমরা। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্তের কথা মাননীয় স্পিকারকে জানিয়েছি। দলের ২৬ জন সদস্যের মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন। অপর একজন ফোনে বলেছেন তিনি সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত।”

বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের বিরতির সময় চুন্নু, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ, সালমা ইসলাম, ফখরুল ইমামসহ ৬-৭ জন সংসদ সদস্য দলের সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের কথা স্পিকারকে জানান।

জাপা চিঠি দিলেও এ বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার এক্তিয়ার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর। তবে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সাধারণ সেটি অনুমোদন করেন।

সংরক্ষিত আসনসহ সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য সংখ্যা ২৬ জন।

দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরের আগে থকেই ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দু’জন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।

এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টি ভেঙেছে বেশ কয়েকবার। দলটির সাবেক মহাসচিবদের নেতৃত্বে আলাদা কয়েকটি দল এখনও সক্রিয় রয়েছে।

তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলে কর্তৃত্ব নিয়ে দেবর-ভাবি কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি আবার ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়।

সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেওয়া হয়। আর জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার আসন নেন।

অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা রওশন গত বছর দেশে ফিরে দল নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বুধবার তার নামে আসা চিঠিতে আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়।

এরপর জি এম কাদেরের পক্ষে তার প্রেস সচিব বিবৃতি দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যান ছাড়া আর কারও কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার নেই। রওশনের ওই পদক্ষেপ ‘অবৈধ’।

রওশন এরশাদ কাউন্সিলের প্রস্তুতির জন্য নিজেই আহ্বায়ক হয়ে কমিটি গঠনের কথা জানান চিঠিতে। দ‌লের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ছয়জন কো-চেয়ারম্যানকে করেন যুগ্ম-আহ্বায়ক।

তবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সচিবের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, মহাসচিব চুন্নুসহ কো চেয়ারম্যানরা ওই কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির বিষয়ে কিছু জানেন না।

৮০ বছর বয়সী রওশন গত কিছু দিন ধরেই অসুস্থ। ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) টানা ৮৪ দিন থাকার পর গত বছর থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন তিনি।

ছয় মাস পর গত জুন মাসে দেশে ফিরে সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দেন রওশন। ওই সময় রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময় সভা করে তিনি অভিযোগ করেন, অসুস্থতার সময়ে দলীয় নেতাদের কেউ তার খবর নেননি। আর এরশাদের মৃত্যুর পর দলটিও এলোমেলো হয়ে পড়েছে।

এরপর ৪ জুলাই আবার ব্যাংকক যান রওশন এরশাদ।

Share if you like