প্রবাসীদের পাঠানো আয়ের ইতিবাচক ধারা চলতি মাসেও বজায় থাকার খবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পঞ্জিকা বছরের প্রথম মাস জানুয়ারির ২৪ তারিখ পর্যন্ত ১৫৩ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
এরমধ্যে ২৪ জানুয়ারি একদিনেই মাসের সর্বোচ্চ ৭ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তিনি।
চলতি মাসেও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পাশাপাশি রেমিটেন্সের পরিমাণ আগের মাস ডিসেম্বরের চেয়ে বেশি হওয়ার আশার কথা জানিয়েছেন মুখপাত্র। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত রেমিটেন্সের হিসাব অনুযায়ী গড়ে দৈনিক দেশে এসেছে ৬ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।
ব্যাংকিং চ্যানেলে আগের বছর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দৈনিক গড় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার; পুরো মাসে মোট এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
অপরদিকে গত ডিসেম্বরে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার; দৈনিক গড়ে এসেছিল ৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। গত নভেম্বরের দৈনিক গড় ছিল ৫ কোটি ৩১ লাখ ডলার। একক মাস হিসেবে নভেম্বরের রেমিটেন্স ছিল ১৫৯ কোটি ডলার।
ডলার সংকটের মধ্যে রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনে গত অর্থবছর থেকেই চাপে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হয়েছিল নেতিবাচক প্রবণতায়। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে রেমিটেন্স কম এসেছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ।
তবে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুতেই ইতিবাচক ধারায় ফেরে প্রবাসীদের পাঠানো আয়। প্রথম মাস জুলাই শুরু হয় ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দিয়ে। দ্বিতীয় মাসেও সমপরিমাণ প্রবৃদ্ধি বজায় থাকলেও ছন্দপতন ঘটে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে। এ দুই মাসেই আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে রেমিটেন্স আসা কমে যায়। নভেম্বর ও ডিসেম্বর তা আবার বাড়তে শুরু করে।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছিল। চলতি অর্থবছরে প্রথম ছয় মাস অর্থাৎ ডিসেম্বর এসেছে এক হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার।
প্রবাসীদের পাঠানো আয় বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এ কারণে প্রবাসীদের আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে আনতে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ জানুয়ারি শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালের এ দিনে যা ছিল ৪৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, জানুযারিতে সন্তানের বিদ্যালয়ে ভর্তিসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেশি হওয়ায় প্রবাসীরা অন্য মাসের চেয়ে কিছুটা বেশি টাকা পাঠান। যে কারণে রেমিটেন্স কিছুটা বাড়ে।
এছাড়া প্রণোদনা, ডলারের বিপরীতে ব্যাংকিং চ্যানেলেই বেশি বিনিময় হার পাওয়ায় এবং কাগজপত্রের জটিলতা কমানোর কারণে রেমিটেন্স বাড়ার আশা করছেন তারা।